বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না- এমন নীতি প্রণয়নের আগে সরকারকে গত ৩ মে জানিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। এত দিন সরকার কেন এ বিষয়ে জানায়নি এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের নীতি আমরা জানাবো কেন?’
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) এ কে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তাকে একটি ‘অপূর্ব’ চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি নতুন ভিসা নীতির কথা জানান। সেখানে ব্লিঙ্কেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার জোরদার করতে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা যেতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা চান তা যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যে জোরালোভাবে বেরিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকার এদেশে সব সময় গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলছে।
দেশে হাজার হাজার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার এসেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৮ সাল থেকে দেশ গণতান্ত্রিকভাবে চলছে। ভোটবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় এসেছেন তাদের এদেশের মানুষ রাখেনি।
কয়েকদিন পর তাদের ফেলে দিয়েছে এডেশের মানুষ। মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে বিশ্বাস করে এবং জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চায়। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মার্কিন সরকারও তাই চায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার করেছিল। এটি প্রতিরোধে ফটো আইডি কার্ড চালু করা হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, রাতে ভোট হয়। এ জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন।
মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার এতে সহায়তা করবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ও বিরোধী দল, সুশীল সমাজ, এনজিও, আইএনজিও সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে এসেছে। তিনি আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহ জোরদার করতে আমরা এটা করেছি। এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।
সরকারের ওপর চাপ বেড়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো ধরনের উস”কানি চাই না। আমার বিশ্বাস, অগ্নিসংযো’গকারী দলগুলো একটু সচেতন হবে। এসব অগ্নিসংযোগ ও রাস্তা দখল আন্দোলন- এগুলো হবে না। তারা আইন অনুযায়ী কাজ করলে সরকার সহযোগিতা করবে।
মোমেন বলেন, “বিরোধীরা সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তিও ধ্বং’স করে। গতবার ৩৮০০ গাড়ি, ২৭টি কোচ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক সরকার, জনগণের ওপর নির্ভরশীল, আমাদের অবস্থান শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। আমরা নির্বাচন করবো। আমরা যা যা ভালো, স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন করবো।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই নীতি সরকারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে না। তারা তাদের কাজ করেছে। আমরা আমাদের কাজ করব।