বিএনপির ‘আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক’ বলে আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান

আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন বিএনপির প্রবীণ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান (Fazlur Rahman)। সম্প্রতি বিভিন্ন বক্তব্যে তিনি সামাজিক মাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছেন। অনেকে তাকে রসিকতা করে ‘বিএনপির আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক’ বলে উল্লেখ করছেন—তার অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগ (Awami League) বিষয়ে উন্মুক্ত মনোভাবের জন্য।

রাজনৈতিক পথচলার নানা বাঁক

ফজলুর রহমান একসময় ছাত্রলীগ (Chhatra League) ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার। ১৯৮৬ সালে কিশোরগঞ্জ-৩ (Kishoreganj-3) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

পরে কাদের সিদ্দিকীর (Kader Siddique) গড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (Krishak Sramik Janata League)–এ যোগ দিলেও সফল হননি। এরপর বিএনপিতে যোগ দিয়ে জেলা সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হন।

আলোচনার পেছনের কারণ

সম্প্রতি বিবিসি বাংলা (BBC Bangla)–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি কোনো দলের নিষেধাজ্ঞার পক্ষে নই, আওয়ামী লীগ থাকবে। কারণ, এটি বাঙালির রাজনীতি।” তার এই বক্তব্যে সমর্থন যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে সমালোচনাও।

অনেকে বলছেন, ফজলুর রহমান বিএনপির হলেও ‘আওয়ামী লীগকে ঘিরে আবেগ ছাড়তে পারেননি’। আবার কেউ বলছেন, “তিনি মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করছেন।” কিছু ব্যবহারকারী তাকে ঠাট্টা করে বলছেন, “বিএনপির আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক”।

আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব নিয়ে মন্তব্য

ফজলুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ কোনো ব্যক্তি নয়। এটি বাঙালি জাতিসত্তার রাজনৈতিক বহিঃপ্রকাশ।” তিনি আরও বলেন, “ঝড় এলে বটগাছ নিচু হয়, কিন্তু বটগাছ শেষ হয় না। আওয়ামী লীগও তেমনই।”

ড. ইউনূস সরকারকে হুঁশিয়ারি

ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে ফজলুর রহমান বলেন, “বাপ ডাইক্কা নির্বাচন দিতে হবে।” তিনি বলেন, “আমরা ক্ষেত করেছি, বীজ লাগাইছি, নিড়ানি দিছি, রক্তে ভিজিয়ে ধান ফলিয়েছি—এখন সেটা বিএনপির ঘরে যাবে না?”

ব্যক্তিত্ব ও জনপ্রিয়তা

অনেকে বলছেন, তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব তাকে অনন্য করেছে। অনেকে আবার তাকে ‘ফজু পাগলা’ বলে ক্ষেপানোর চেষ্টা করেন। তবে তার সাহসিকতা ও স্পষ্টবাদিতাকে কৌতুক নয়, শ্রদ্ধার চোখেই দেখছেন সচেতন নাগরিকরা।

অন্যান্য ‘ফজলুর রহমান’দের স্মরণ

এই প্রতিবেদনে আরও কয়েকজন নামী ফজলুর রহমানকে স্মরণ করা হয়েছে—যেমন, সিয়ার্স টাওয়ারের নকশাবিদ ফজলুর রহমান খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল, এবং শিল্পপতি সালমান এফ রহমান। পাশাপাশি স্মরণ করা হয়েছে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুকেও।