বিদ্যুৎ খাতে ভারতের নির্ভরতা কমিয়ে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ খাতে ভারতের (India) ওপর নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশ। কখনো হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া, কখনো দাম বাড়িয়ে দেওয়া—এসব ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। তবে ২০২৫ সালে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)’র আমলে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে বর্তমান নেতৃত্বে এসেছে কৌশলগত পরিবর্তন।

বিদ্যুৎ খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনের যাত্রা

প্রফেসর ইউনূস (Professor Yunus) এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে বিদ্যুৎ খাতকে নতুন কাঠামোয় ঢেলে সাজায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় কুইক রেন্টাল প্রকল্পের নবায়ন। দেশীয় গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ বাড়ানো হয়। পায়রা, রামপাল, ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পরিচালনায় বিদেশি নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেশীয় প্রকৌশলীদের সম্পৃক্ত করা হয়।

ফলাফল: নির্ভরতা থেকে স্বাধীনতা

বর্তমানে বাংলাদেশ নিজের চাহিদার ৯৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নিজেই উৎপাদন করছে। যেখানে ভারতের ওপর নির্ভরতা একসময় ছিল ২০ শতাংশ, তা এখন নেমে এসেছে ৭-৮ শতাংশে। দেশের ৯৭ শতাংশ এলাকাই বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। সীমান্তবর্তী কুমিল্লা (Comilla) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া (Brahmanbaria) অঞ্চলেও এখন জ্বলছে বাংলাদেশের নিজস্ব বিদ্যুৎ।

সৌরবিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির অগ্রগতি

বর্তমানে বাংলাদেশের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৭০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে তা ২০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবেও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভূরাজনীতিতে বিদ্যুৎ খাত

সম্প্রতি বিদ্যুৎ খাত নিয়ে এক গোপন বৈঠকের খবর ফাঁস হয়েছে, যেখানে একটি বিদেশি মিশনের প্রতিনিধির সঙ্গে নিরাপত্তা ও কৌশলগত আলোচনা হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎ এখন আর শুধু প্রযুক্তি বা অর্থনৈতিক খাত নয়—এটি হয়ে উঠেছে নতুন ধরনের ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র।

ভারতের প্রতিক্রিয়া ও নতুন প্রস্তাব

এমন পরিস্থিতিতে ভারতের তিনটি বড় বিদ্যুৎ কোম্পানি আবারো ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা কম দামে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দিচ্ছে। হঠাৎ এই আগ্রহের পেছনে রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।