বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government) নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ও সন্দেহ থাকলেও, এ নিয়ে পরিষ্কার বক্তব্য দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ (Wahiduddin Mahmud)। তিনি বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য দুটি—গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
এনইসি বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টার বক্তব্য
রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) (National Economic Council – NEC) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। শেরে বাংলানগরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের দুটি প্রধান উদ্দেশ্য—একটি সুশাসিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বাস্তবায়ন। তাহলে এত দাবি কেন? এত বছরের বঞ্চনা আমরা অল্প সময়ে দূর করব কীভাবে?”
তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক সরকার বেশি সংবেদনশীল হওয়ায় অনেকেই তাদের দাবির বাস্তবায়ন চায়। কিন্তু সংস্কার ও পরিকল্পনার জন্য নিরবচ্ছিন্ন সময় দরকার।”
বাজেটের লক্ষ্য: শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাজস্ব বৃদ্ধি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে ‘শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের বাজেট’ বলে উল্লেখ করেন ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানান, এবারের বাজেট হবে দায়িত্বশীল এবং এর মূল লক্ষ্য হলো বাজেট ব্যবস্থাপনা টেকসই করা ও রাজস্ব আয় বাড়ানো।
সেইসঙ্গে তিনি জানান, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টাও থাকবে, যাতে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন
সভায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়। এবারের এডিপি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দেশের সম্পদ, বৈদেশিক অর্থায়ন ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে—
– দারিদ্র্য দূরীকরণ
– কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
– কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প
– শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
– তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞান
– বিদ্যুৎ উৎপাদন
– দুর্যোগ মোকাবিলা ও পুনর্বাসন
– মানবসম্পদ উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসমূহ
উপস্থিত ছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের (Bangladesh Bank) গভর্নর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।