বিএনপি (BNP)-র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান (Nazrul Islam Khan) বলেছেন, “বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের (Awami League) সঙ্গে কোনো আপস নয়।” তিনি দাবি করেন, “আওয়ামী লীগই বিএনপির ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন চালিয়েছে, আমাদের নেত্রীকে বিনা কারণে কারাগারে বন্দি করেছে এবং তারেক রহমানকে (Tarique Rahman) নির্বাসনে পাঠিয়েছে। আমরা কি সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করবো?”
রোববার (১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের (National Press Club) এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এই সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট (12-Party Alliance)। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা এবং তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ।
দীর্ঘ সংগ্রাম এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি
নজরুল ইসলাম বলেন, ১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। জাতিসংঘের (United Nations) রিপোর্ট অনুযায়ী, “জুলাই আন্দোলনে” ১৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা, সহস্রাধিক আহত ও পঙ্গু হয়েছেন। এই লড়াইয়ের উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানো এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনো জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন অপরিহার্য।
সংস্কার রূপরেখা ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
তিনি আরও জানান, “২০১৭ সালে খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) ‘ভিশন-২০৩০’ উপস্থাপন করেন, পরে ২০২৩ সালে তারেক রহমান ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেন, যা পরবর্তীতে ৩১ দফায় পরিণত হয়। আজ যেসব অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কথা বলছে, তা আমাদের এই ৩১ দফার মধ্যেই রয়েছে।”
তিনি বলেন, “জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে আমরা ইনশাআল্লাহ সেই রূপরেখা বাস্তবায়ন করবো। আমরা চাই কেউ যেন দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন এবং রাষ্ট্রে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে।”
অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এলডিপির (Bangladesh LDP) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম (Shahadat Hossain Selim), জাতীয় দলের (National Democratic Party) চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা (Syed Ehsanul Huda), জাতীয় পার্টির (Jatiya Party) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার (Mostafa Jamal Haider)।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু (Tamijuddin Titu), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম (Mufti Golam Mohiuddin Ikram), জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন (Ahsan Habib Linkon), লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান (Faruk Rahman), কল্যাণ পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ (Shamsuddin Parvez), এবং জাগপার (JAGPA) একাংশের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান (Iqbal Hossain Prodhan)।