বিএনপি (BNP)র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed) সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, “ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)-কে যদি শপথ গ্রহণ করানো না হয়, তাহলে চলমান আন্দোলন অন্যভাবে রূপ নিতে পারে।”
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে সিলেট নগরের বালুচরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আজ রাতেই শপথের ব্যবস্থা করুন’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আন্দোলনকারীরা ঢাকায় নগর ভবন ঘেরাও করে রেখেছে। তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে আলটিমেটাম দিয়েছে—আদালতের রায় অনুযায়ী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু তার মানে এই নয়, আপনারা যা ইচ্ছা তাই করবেন আর আমরা মেনে নেব। আজ রাতের মধ্যেই শপথের ব্যবস্থা করুন, নইলে আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নিতে পারে।”
আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য নেওয়ার দরকার নেই
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে ১৮ নয়, বাস্তবে ১৯ কোটি মানুষ। এত বড় দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির কি এতই আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য নিতে হবে?” তিনি দাবি করেন, “আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নেই। এই দল শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদ লালন করে এসেছে।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। এই দল ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য গণহত্যাকারী। তারা এখনো কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেনি, বরং আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলছে।”
বিএনপি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার রক্ষক
বিএনপিকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের রক্ষক দাবি করে সালাহউদ্দিন বলেন, “বিএনপি না থাকলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংসদীয় পদ্ধতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসতো না। ফ্যাসিবাদের পতনও হতো না।”
তিনি বলেন, “তারেক রহমানের (Tarique Rahman) ৩১ দফা রূপরেখা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, তারাই আমাদের দলের সদস্য হতে পারে।”
সতর্কতা ও তৃণমূলের মূল্যায়নের আহ্বান
সালাহউদ্দিন আহমদ দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন বিএনপির সদস্য হতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্ব। নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে সেটা যেন প্রতিহিংসায় রূপ না নেয়।”
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট) জি কে গউছ (G.K. Gaus) এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী (Miftah Siddiqui)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত (M. Rasheduzzaman Millat)।
সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, এম এ মালেক, সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, এবং সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।