রাজশাহী ও নওগাঁর দুই বিএনপি নেতার ফোনালাপ ফাঁস: ঠিকাদারি নিয়ে তীব্র বিরোধ

রাজশাহী (Rajshahi) ও নওগাঁ (Naogaon) জেলার দুই বিএনপি (BNP) নেতার মধ্যে ঠিকাদারি কাজ নিয়ে তীব্র বিরোধের একটি টেলিফোন আলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপ ও বক্তব্য

ফাঁস হওয়া প্রায় ১০ মিনিটের ফোনালাপে রাজশাহী বিএনপি নেতা মাহমুদুল হক (রুবেল) (Mahmudul Haque (Rubel)) কে নওগাঁ বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার শাহজাহান আলী (Shahjahan Ali)-কে হুমকি দিতে ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়।

ফোনালাপে মাহমুদুল হক বলেন, “১৭ বছর খাইনি, এখন খাব।” তিনি অভিযোগ করেন, শাহজাহান কোনো যোগাযোগ না করেই দরপত্রে অংশ নিয়ে কাজ পেয়ে গেছেন। উত্তরে শাহজাহান বলেন, “আমিও তো ১৬ বছর পর একটা কাজ পেয়েছি।”

দরপত্র ও বিরোধের সূত্রপাত

ঘটনার সূত্রপাত সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ (Roads and Highways Department)-এর রাজশাহী অঞ্চলের বৃক্ষপালনবিদ কার্যালয়ের দরপত্রকে ঘিরে। সম্প্রতি বিভাগটি সরকারি গাছ বিক্রির জন্য ৯টি লট তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করে। এতে নওগাঁ জেলা থেকে শাহজাহান আলী অংশ নেন এবং প্রায় ছয় লাখ টাকায় দুটি লটের কাজ পান।

মাহমুদুল হক (রুবেল) দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতাদেরও দরপত্র প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি ছিল, যা উপেক্ষিত হয়েছে বলেই তিনি ক্ষুব্ধ হন।

প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য

ফোনালাপের সত্যতা স্বীকার করে মাহমুদুল হক বলেন, “আমাদের অনেক কর্মী আছে। একটা কাজ হলে তারা প্রত্যাশা করে কিছু পাবে। শাহজাহান দেখা করেনি, তাই ফোনে বলেছি। তবে অশোভন ভাষা ব্যবহার ঠিক হয়নি, রাগের মাথায় হয়ে গেছে।”

অন্যদিকে, ঠিকাদার শাহজাহান আলী বলেন, “ওদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। সড়ক অফিসও ওই এলাকায়। ওদের অনেক কথাই থাকে। আমাকে ফোন করে বলেছে, আমার তো কিছু করার নেই।”

বিএনপি-র একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, “একটা দরপত্র নিয়ে এমন আচরণ কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।”

বিশ্লেষণ

স্থানীয় এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “এই ঘটনাটি রাজনীতিতে চাঁদাবাজি ও প্রভাব খাটানোর সংস্কৃতির একটি নগ্ন উদাহরণ। যেখানে গণতন্ত্রের চর্চা হবার কথা, সেখানে ‘খাই খাই’ মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।”