চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন: শাহাদাত হোসেন সেলিম

বাংলাদেশ এলডিপি (Bangladesh-LDP) ও ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম (Shahadat-Hossain-Selim) এক টেলিভিশন টকশোতে চট্টগ্রাম বন্দর (Chattogram-Port) ইস্যুতে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। এটি কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নয় বরং একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা।” তিনি দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড (DP-World)–এর হাতে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

NCT-এর দক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে সেলিমের বক্তব্য

তিনি বলেন, “২০০৭ সালে নির্মিত নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (NCT) প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এবং এতে ৪০০০ কোটি টাকার আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। বিগত ১৭ বছর ধরে এটি দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে এবং লাভজনক সংস্থা হিসেবে পরিচিত।”

ডিপি ওয়ার্ল্ডকে হস্তান্তরের পেছনে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা

শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “বিগত সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের আয় থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেছে, কিন্তু এটি নিজের অর্থেই পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকেই পায়রা ও মাতারবাড়ি (Matarbari) বন্দরের অর্থায়ন হচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা (Sheikh-Hasina) সরকারের মেয়াদে একটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। এমনকি শেখ হাসিনার মেয়ের জামাতার দুবাইয়ের কারাগারে আটক থাকা এবং তাকে ছাড়িয়ে আনতে এই হস্তান্তরের ইস্যু সামনে আসে বলে শোনা গেছে, যদিও এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই।”

অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন

সেলিম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা সীমিত। নির্বাচনের আগে কোনো বড় সিদ্ধান্ত তাদের নেওয়া উচিত নয়।”

আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়ন এবং স্বার্থবিরোধী চুক্তির সমালোচনা

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা এখন বিশ্বমানে পৌঁছেছে। ১০ বছর আগে যেখানে এটি ১০০তম অবস্থানে ছিল, এখন তা ৭০-৭২তম স্থানে রয়েছে। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক টেন্ডার ছাড়া বিদেশি কোম্পানিকে হস্তান্তরের চেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ।”

সেলিম জানান, তারা বিদেশি বিনিয়োগের বিপক্ষে নন, তবে তা হওয়া উচিত ‘বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার’ (BOT) ভিত্তিতে, যাতে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার পর নির্দিষ্ট সময় শেষে সরকারের কাছে হস্তান্তর করে।

সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর হ্যান্ডিং ওভার করা হলে দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং স্থানীয় জনগণের প্রতি দায়িত্ব অবহেলা করা হবে। এখন সব রাজনৈতিক দল এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”