বিএনপি (BNP) নেতাদের শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য নিয়ে দেশে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু (Shamsuzzaman Dudu) সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিরোধীদের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। তার এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ, এমনকি বিএনপির নিজ দলের অনেক সমর্থকরাও।
শামসুজ্জামান দুদুর অশ্রাব্য বক্তব্য ভাইরাল
জাতীয় প্রেস ক্লাব (National Press Club) এর মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত একটি সভায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “বিএনপি নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করে দেন, তাহলে সেই তোড়ে বিরোধীরা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বে।” এছাড়াও তিনি বলেন, “থুথুর মধ্যেও তোমাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।” তার এমন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দার ঝড় তোলে।
তরুণদের কৌশলী জবাব
এনসিপি (NCP) এর উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক ও ২৪-এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা সার্জিস আলম (Sarjis Alam) দুদুর বক্তব্যের বুদ্ধিদীপ্ত এবং ব্যঙ্গাত্মক জবাব দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেন, “বিগত ১৬ বছরে দুদু ভাই একটা গণপ্রস্রাব কর্মসূচির ডাক দিলেই পারতো!” পরবর্তী পোস্টে তিনি ব্যঙ্গ করে লেখেন, “ঢাকায় মুষলধারে যেটা হচ্ছে সেটা বৃষ্টি নাকি দুদু ভাইয়ের দেওয়া কর্মসূচি? কনফিউজড!”
সার্জিসের এমন কৌতুকপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সামাজিক মাধ্যমে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই বলছেন, যেখানে সিনিয়ররা কটু ও অশালীন ভাষা ব্যবহার করছেন, সেখানে তরুণরা অধিকতর সংযত এবং কৌশলী ভাষায় জবাব দিচ্ছেন।
পূর্বেও বিতর্কিত বক্তব্যে আলোচিত বিএনপি নেতারা
এটাই প্রথম নয়—বিএনপির নেতারা আগেও অশ্রাব্য বক্তব্য ও শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন। এক অনলাইন টকশোতে বিএনপি নেতা ফজুলর রহমান ছাত্র প্রতিনিধি মিনহাজ উদ্দিনকে ‘রাজাকারের ছেলে’, ‘আলবদরের ছেলে’ বলে সম্বোধন করে সমালোচনার মুখে পড়েন।
এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas) এক ইউটিউব চ্যানেলে প্রবাসী সাংবাদিকদের গালিগালাজ নিয়ে শিষ্টাচারের প্রশ্ন তোলেন, অথচ তার দলের নেতারাই বারবার শিষ্টাচার লঙ্ঘন করছেন।
নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বিএনপির ভাবমূর্তিতে
সাধারণ নাগরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং নেতিবাচক রাজনীতি বিএনপির জনপ্রিয়তা ক্রমেই ক্ষয় করছে। অনেক সাধারণ সমর্থকও মনে করেন, দলের অভ্যন্তরে এখনই নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করলে দলটির রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।