জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) (National Citizens’ Party) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ (Hasnat Abdullah) আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরির অপচেষ্টা চলছে। ছাত্র উপদেষ্টাদের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার গুজব ছড়িয়ে দলটির বিরুদ্ধে একাধিক দিক থেকে ষড়যন্ত্র পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট
হাসনাত বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam) ও ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম (Mahfuz Alam) উভয়েই নির্বাচন বিষয়ে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
২১ মে এক সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম জানান, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, আমরা এটি সমর্থন করেছি। তবে আমরা বিচার ও সংস্কারের কথাও বলেছি।”
ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ১০ মে জানান, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।”
ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি অগ্রহণযোগ্য
হাসনাত প্রশ্ন তোলেন, “দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করা কীভাবে যৌক্তিক হতে পারে?” তিনি বলেন, “যারা অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন এবং ইন্টারিম সরকারের অংশ, তাদের পদত্যাগ চাওয়া বাস্তবসম্মত নয়।”
সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সালিশ থেকে দূরে রাখার আহ্বান
তিনি সতর্ক করেন, “আমাদের অবচেতন মনে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সালিশের ক্ষমতা দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “বিএনপি (BNP) সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের শিকার দল এবং ওয়ান-ইলেভেন ও তারেক রহমান (Tarique Rahman)–এর নির্যাতনের স্মৃতি এখনো তাজা।”
তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের পাহারাদার হিসেবে ভূমিকা রাখবে, তবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া যাবে না।”
আওয়ামী লীগ বিচারের দাবি
হাসনাত বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে যেসব দল আমাদের পাশে ছিল, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকবে। তবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “গণতন্ত্র, রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের একযোগে কাজ করা জরুরি।”
বিদেশি হস্তক্ষেপ ও বিভাজনের বিপদ
তিনি বলেন, “২০২৪-এর অভ্যুত্থানের পর গড়ে ওঠা বিপুল সম্ভাবনাকে নষ্ট করা ঐতিহাসিক ব্যর্থতা হবে।”
তিনি সতর্ক করেন, “আমরা যেন বিভাজনের পথে না যাই এবং অন্যদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ না দিই। বাইরের শক্তিকে রাজনৈতিক মাতব্বরির সুযোগ না দিয়ে গণতন্ত্রের পথ রক্ষা করতে হবে।”
সবশেষে, হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আধিপত্যবাদবিরোধী ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যাতে আমরা একটি স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।”