বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আবারও পুশ-ইন–এর ঘটনা বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) (BSF)–এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাসহ বহু মানুষকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় চরম উদ্বেগ, নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
পাটগ্রামে রাতের অন্ধকারে পুশ-ইন
গত পরশু রাতে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ আবারো একটি পুশ-ইন ঘটায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। বর্তমানে আটক ব্যক্তিরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘ সময় ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো
আটক ব্যক্তিদের অনেকে জানান, তারা গুজরাটসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। কারো কারো অবস্থান দুই থেকে দশ বছর পর্যন্ত। তাদের দাবি, বাংলাদেশ-ভারত রাজনৈতিক উত্তেজনার পর ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাড়াশি অভিযান চালিয়ে বহু বাংলাদেশিকে আটক করে সীমান্ত এলাকায় এনে বাংলাদেশে পুশ-ইন করছে।
পঞ্চগড়ে সীমান্ত জটিলতা আরও তীব্র
পঞ্চগড় জেলার তিনটি উপজেলা ভারত দ্বারা বেষ্টিত। জেলার প্রায় ২০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বহু স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। ফলে সেখানে নিয়মিত চোরাচালানসহ নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। গত বছর চোরাচালানকেন্দ্রিক সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটে। বিগত দুই সপ্তাহে পঞ্চগড় সীমান্তে আবারো পুশ-ইনের ঘটনায় নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনার ঘটনা এবং বিজিবির উদ্বেগ
গত ১৭ মে এবং পরশু রাতে খুলনা জেলার নড়াইল থেকে অন্তত ২১ জন নারী, শিশু ও পুরুষকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। বিজিবি জানায়, ভারতীয় বাহিনী আইন লঙ্ঘন করে এই কাজ করছে। বিশেষভাবে অভিযোগ রয়েছে—পুশ-ইনের সময় রাতের পাহারায় ব্যবহৃত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সার্চলাইটগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে।
সীমান্তে জনমনে আতঙ্ক
সীমান্তবর্তী মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, এই অনুপ্রবেশ যদি রোধ না করা হয়, তাহলে নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে। বিজিবি স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও জনসাধারণকে যুক্ত করে পাহারার ব্যবস্থা জোরদার করেছে। তবু স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছে সীমান্তবাসী।