“সহযোগিতা করছি, করে যাব”—অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে স্পষ্ট বার্তা সেনাপ্রধানের

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান (General Waqar-uz-Zaman) বলেছেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government)কে সহযোগিতা করছি, সহযোগিতা করে যাব।” তবে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে জানান, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া কীভাবে এবং কী হচ্ছে সে বিষয়ে তাকে কিছু জানানো হয়নি, এমনকি কোনো পরামর্শও চাওয়া হয়নি।

সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেসে বক্তব্য

২১ মে, ঢাকা সেনানিবাস (Dhaka Cantonment)ে এক অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কর্মকাণ্ডে কখনো যুক্ত হবে না, কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না।”

তিনি সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনকালে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।

জাতীয় নির্বাচন ও মানবিক করিডর প্রসঙ্গ

সেনাপ্রধান জানান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। এ ছাড়া মিয়ানমার (Myanmar)ের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ, স্পর্শকাতর এবং অসম্ভব।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “মানবিক করিডরের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। পলিটিক্যাল কনসেনসাস ছাড়া এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না।”

সেনাবাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর অভিযোগ

সেনাপ্রধান বলেন, “আগস্ট থেকে আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল আমাকে এবং সেনাবাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু বানানোর চেষ্টা করছে।”
তিনি ‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়েও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া

সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা উচিত নয়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka)র রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ (Dr. Sabbir Ahmed) বলেন, “২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় সেনাপ্রধানের ভূমিকা প্রশংসনীয় ছিল। তবে এখন সার্বভৌমত্ব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সেনাবাহিনীর মতামত ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।”

তিনি যোগ করেন, “রাষ্ট্রের সংস্কারে সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা যেত। কারণ তাদেরও সংস্কার প্রয়োজন।”