বিএনপি (BNP), জামায়াত (Jamaat) ও এনসিপি (NCP)– এই তিন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–এর সঙ্গে যমুনা (Jamuna) এলাকায় বৈঠকে মিলিত হন। রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্য থাকলেও বৈঠক শেষে দলগুলো তাদের পূর্বের অবস্থানে অনড় থাকে।
বিএনপির দাবি ও অবস্থান
বৈঠকে বিএনপি লিখিতভাবে নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি তোলে এবং দুই ছাত্র উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়। তারা দাবি করে, কিছু উপদেষ্টার পক্ষপাতমূলক ভূমিকা সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
চিঠিতে ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)–এর শপথ না হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করা হয় এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan)–এর পক্ষপাতমূলক আচরণ তুলে ধরা হয়। বিএনপির মতে, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা জরুরি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে ফাটল ও এনসিপির ভূমিকায় উদ্বেগ
বিএনপি চিঠিতে দাবি করেছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল দেখা দিচ্ছে এবং এনসিপি যেভাবে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তা সরকার ও বিএনপিকে বিব্রত করেছে। তারা মনে করে, এই কর্মসূচি উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনক, এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনকারী সংস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন
চিঠিতে আরও বলা হয়, মানবিক করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দর (Chittagong Port)–সংক্রান্ত কার্যক্রমে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কিনা, তা বিবেচনার দাবি রাখে।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্য
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) বলেন, সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি কখনো তোলেনি বিএনপি।
অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Khandaker Mosharraf Hossain) বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জনগণ যদি বিএনপিকে ক্ষমতায় আনে, তবে তারা এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বিলম্ব হলে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হবে এবং এর দায় বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্টদের।
বিএনপির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মঈন খান (Abdul Moyeen Khan) ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury)।
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission)–এর সহসভাপতি আলী রীয়াজ (Ali Riaz) এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)।