অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বন্ধ্যা’ অভিহিত করে সংস্কার অক্ষম বললেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘বন্ধ্যা’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি (BNP)’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (Goyeshwar Chandra Roy) বলেছেন, “এই সরকারের পক্ষে কোনো সংস্কার সম্ভব নয়।” রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব (National Press Club)-এ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

“বন্ধ্যা নারীর পক্ষে সন্তান জন্মানো যেমন সম্ভব নয়…”

গয়েশ্বর বলেন, “যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৫০টির বেশি রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু এই অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়ে সংস্কার সম্ভব নয়। যতই আকর্ষণ থাকুক, বন্ধ্যা নারীর পক্ষে সন্তান জন্মদান যেমন সম্ভব নয়, তেমনি এই সরকারের পক্ষে সংস্কার সম্ভব নয়।”

ইউনূসের পদত্যাগ ও আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া

ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) পদত্যাগ করবেন কি না, এ নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে গয়েশ্বর মন্তব্য করেন, “ইউটিউবাররা বলছে দেশে আসছে, আন্দোলন করছে। ইউনূস সাহেবকে রাস্তায় নামানো যাবে না এমন আবেগ কাজ করেনি। আমরা চাই ইউনূস সফল হোন, সেটিই হবে জুলাই আন্দোলনের সফলতা।”

ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য

জুলাই আন্দোলনের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, “৯০ শতাংশ ছাত্র পড়ার টেবিলে ফিরে গেছে। বাকিরা সচিবালয়, এসপি, ইউএনও অফিসে যাচ্ছেন—সেখানে তাদের কাজ কী?”

দুর্নীতির অভিযোগ ও সরকার সম্পর্কে মন্তব্য

তিনি বলেন, “হাসিনা আমলের দুর্নীতিবাজরা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এই সরকার দুর্নীতি দমনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মানুষ বলছে, প্রধান উপদেষ্টা যত সুবিধা নেওয়া দরকার নেবেন, কিন্তু পদত্যাগ করবেন না।”

চট্টগ্রাম বন্দর লিজ ইস্যুতে হুঁশিয়ারি

সভায় মোস্তফা জামাল হায়দার (Mostafa Jamal Haider) বলেন, “নয় মাসে একজনেরও বিচার হয়নি। অথচ বন্দর লিজ দিতে চাচ্ছে সরকার। দরকার হলে দেশের মেধাবীদের দিয়ে পরিচালনা করুন, কিন্তু বিদেশিদের নয়।”

রুহিন হোসেন প্রিন্স (Ruhin Hossain Prince) বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর লিজ, এনবিআর ভাঙা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। তারা সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিক।”

মজিবুর রহমান মঞ্জু (Mujibur Rahman Manju) গণশুনানির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, “সব সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার নিতে পারে না।”

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ এহসানুল হুদা (Syed Ehsanul Huda) বলেন, “সরকার বন্দরের সিদ্ধান্ত থেকে না সরলে বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।”

উপস্থিত বক্তারা

দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’ (Desh Bachao Bondor Bachao Andolon)–এর আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন:
শাহাদাত হোসেন সেলিম (Shahadat Hossain Selim) – বাংলাদেশ এলডিপি চেয়ারম্যান
সাইফুল হক (Saiful Haque) – বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
বজলুর রশিদ ফিরোজ (Bazlur Rashid Firoz) – বাসদ
নাজমুল হক প্রধান (Nazmul Haque Prodhan) – বাংলাদেশ জাসদ
নূরুল হক নূর (Nurul Haque Nur) – গণঅধিকার পরিষদ
তারেক রহমান (Tarique Rahman) – আমজনতা পার্টি