ফ্যাসিবাদবিরোধী চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-এ চোখ হারানো চারজন আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ রোববার (২৫ মে) রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (National Institute of Ophthalmology and Hospital)-এ বিষপান করেন। আহতরা হলেন— শিমুল, মারুফ, সাগর এবং আখতার হোসেন (তাহের)। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Shaheed Suhrawardy Medical College Hospital)-এ স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত।
বিএনপি’র সহমর্মিতা ও চিকিৎসা সহায়তা
আহতদের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপি (BNP)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)। দলের ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের মাধ্যমে এই সহায়তা দেওয়া হবে।
রাতেই তার নির্দেশে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে যান। তিনি আহতদের এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহানুভূতির বার্তা পৌঁছে দেন।
দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি
এ সময় উপস্থিত ছিলেন:
- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন
- ড্যাবের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ডা. আ.ন.ম মনোয়ারুল কাদির বিটু
- ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন
- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল
- কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ডা. মঞ্জুরুল আজিজ ইমন
- ছাত্রদলের সাবেক সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এম আর হাসান
- সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ডা. তাওহীদুল ইসলাম সৈকত ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইমরান হোসেন
- ছাত্রনেতা শিহাব ও সিফাতসহ বিএনপি ও ছাত্রদলের অসংখ্য নেতা-কর্মী।
বিষপানের পেছনের কারণ
ঘটনাটি ঘটে দুপুরে একটি চলমান বৈঠক চলাকালে, যেখানে আহতরা জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। কক্ষে প্রবেশ করে তারা দাবি জানালেও সিইও অপেক্ষা করতে বললে হতাশা ও ক্ষোভে তারা তাৎক্ষণিকভাবে বিষপান করেন। হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দীর্ঘদিনের অবহেলায় হতাশা
আহতদের একজন বলেন, “এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতে হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না।” তারা অভিযোগ করেন, গত ৯ মাসে উন্নত চিকিৎসা কিংবা পুনর্বাসনের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এর আগে শনিবার (২৪ মে) শাহবাগে জুলাই ফাউন্ডেশন (July Foundation) কার্যালয়ে এক বাকবিতণ্ডা হয় সিইও ও আহতদের মধ্যে। আহতরা বলেন, “স্যার, আমাদের যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে বিষ কিনে দেন—আমরা খেয়ে মরব। তবেই সব সমস্যার সমাধান হবে।”