৫ আগস্ট ৫ ঘণ্টা বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন—দ্য ওয়ালকে ওবায়দুল কাদের

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিনে ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader) প্রায় ৫ ঘণ্টা বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন নিজেই। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল (The Wall)’র এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকার (Amal Sarkar)কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য প্রকাশ করেন সাবেক আওয়ামী লীগ (Awami League) সাধারণ সম্পাদক।

“লুটপাটের উত্থান” এবং বেঁচে ফেরার অভিজ্ঞতা

তিনি জানান, “৫ আগস্ট ছাত্রদের এক ‘ষড়যন্ত্রমূলক উত্থান’ ঘটে। তখন আমি আমার সংসদ এলাকার পার্শ্ববর্তী একটি বাসায় আশ্রয় নিই। মিছিল ও হামলার মুখে আমি স্ত্রীসহ বাথরুমে আশ্রয় নেই। সেখানে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলাম। এমনকি তারা বাথরুমে কমোড-বেসিন পর্যন্ত লুট করে।”

তখনকার ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “ছাত্রদের কিছু অংশ আমাকে চিনে ফেলে। কেউ সেলফি তোলে, কেউ আমাকে তুলে দেয়ার কথা বলে—শেষমেশ এক অটোতে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে তুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাগ্য ভালো ছিল বলেই বেঁচে গেছি।”

ছাত্রলীগ ও হামলার বিষয়ে ব্যাখ্যা

ছাত্রলীগ (Chhatra League)কে অভ্যুত্থান দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কিনা, সে প্রশ্নে কাদের বলেন, “আমি কখনো ছাত্রলীগকে তা বলিনি। এই কথাগুলো ইউটিউবে একটি ব্যারিস্টার ছড়িয়েছে। মেট্রোরেল, সেতুভবন (Setu Bhaban), বিটিভি ভবন (BTV Bhaban)সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ হচ্ছিল। আমি পার্টি সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।”

ভুল-ত্রুটি ও আত্মসমালোচনা

তিনি বলেন, “১৫ বছর আমরা শাসন করেছি। এতো বড় একটা দল হয়েও ছাত্র আন্দোলনের শক্তি বুঝতে পারিনি, এটাও একটা ব্যর্থতা।” নিজের দায় নিয়ে বলেন, “নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি। ভুল থাকতে পারে, তবে চাঁদাবাজি বা কমিশন খাইনি।”

ডেভেলপমেন্ট বনাম সমালোচনা

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “১৫ বছরের বাংলাদেশের পরিবর্তন রাত-দিনের মতো। যারা অন্ধ সমালোচনা করে, তারা আমাবস্যায় পূর্ণিমা খোঁজে।”

দীর্ঘ নীরবতার কারণ

অনেকদিন নীরব থাকায় প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। জবাবে কাদের বলেন, “আমাকে চুপ থাকতে বলা হয়নি। আমি অসুস্থ ছিলাম এবং নেত্রী নিজেই আমার খোঁজ নিয়েছেন। দলেও প্রতিযোগিতা থাকে—এটাই স্বাভাবিক।”