সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ (Government Job (Amendment) Ordinance 2025) অনুমোদনের পর থেকেই ব্যাপক ক্ষোভ ও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সচিবালয়ে (Secretariat)। সরকারি কর্মকর্তারা এটিকে কালাকানুন আখ্যা দিয়ে অধ্যাদেশটি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।
অধ্যাদেশের মূল প্রস্তাবনা ও প্রেক্ষাপট
২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন (Government Job Act) সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশের খসড়া গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার (Chief Advisor) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে এটি অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হয়।
কী আছে নতুন অধ্যাদেশে?
এই অধ্যাদেশে “৩৭ক” নামে একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, কর্মবিরতি, বা অন্যদের উসকানি দেয়াকে “অসদাচরণ” হিসেবে গণ্য করা হবে এবং এর জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রস্তাবিত শাস্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- নিম্নপদে বা বেতন গ্রেডে অবনমিত করা
- চাকরি থেকে অপসারণ
- চাকরি থেকে বরখাস্ত
এছাড়া নোটিশ দেওয়ার, কারণ দর্শানোর, ব্যক্তিগত শুনানির সুযোগ এবং আপিল বা পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া এই অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে, রাষ্ট্রপতির প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে এবং তার বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না—এটি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
কেন বিক্ষোভ?
নতুন ধারা ৩৭ক-কে “নিবর্তনমূলক” ও “অধিকার হরণকারী” হিসেবে বর্ণনা করছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। তাদের দাবি, এটি কর্মস্থলে স্বাধীন মত প্রকাশ ও সংগঠিত হওয়ার অধিকার হরণ করছে। ফলে টানা তৃতীয় দিনের মতো তারা সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরকারি কর্মচারীরা মনে করছেন, ছুটি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ, বা কোনো যৌক্তিক আন্দোলনে অংশ নেওয়া এখন থেকে কঠোর শাস্তির আওতায় পড়বে, যা তাদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
বিক্ষোভরত কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে সরকারের আইন উপদেষ্টা (Legal Advisor)র। তবে সচিবালয়ের অনেক কর্মকর্তা বলছেন, অধ্যাদেশটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।