জাতীয় নাগরিক পার্টি (Jatiya Nagorik Party)’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ (Abdul Hannan Masud) সচিবালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) (National Board of Revenue – NBR) এবং চট্টগ্রাম বন্দরে (Chattogram Port) চলমান আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
সোমবার (২৬ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ সচিবালয়, এনবিআর কিংবা পোর্টে যারা স্ট্রাইক করছেন, তাদের বলছি—বিপ্লব ওখানেও হবে। আপনারা দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বাধীনতা চাচ্ছেন। কিন্তু ‘২৪-পরবর্তী সময়ে এটা আর পাবেন না।”
‘পার পাওয়ার সুযোগ নেই’
হান্নান মাসউদ আরও লিখেন, “হাসিনার পুরো শাসনামলের প্রতিটি গুম, খুন, দুর্নীতি, অর্থপাচার—সবকিছুর সহযোগী আপনারা। ভাববেন না, পার পেয়ে গেছেন। পুনশ্চ বলছি, পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকারের উচিত অবিলম্বে এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের অপসারণ করে নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।”
একই সুরে হুঁশিয়ারি হাসনাত আব্দুল্লাহরও
এর আগে, একইদিন সকালে চট্টগ্রামে এনসিপির এক কর্মসূচিতে দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah) বলেন, “কর্মচারীরা সরকারের কাজে বাধা দিলে বা হুমকি দিলে জনগণই তাদের বিকল্প খুঁজে নেবে। সরকারকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।”
আন্দোলনের পটভূমি
চলমান এই বিক্ষোভের মূল প্রেক্ষাপট হচ্ছে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’। গত বৃহস্পতিবার এটি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর রোববার রাতে এটি জারি করা হয়। এতে চার ধরনের অপরাধে দ্রুত ও সহজে শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হয়, যা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতে সংবিধান পরিপন্থী এবং ‘নির্বর্তনমূলক ও কালাকানুন’।
এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গতকাল রোববার থেকে সচিবালয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
এনবিআরের আন্দোলন ও সরকারি প্রতিক্রিয়া
গত ১২ মে রাতে এনবিআরকে ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি হয়। এর বিরুদ্ধে কর্মসূচি হিসেবে অবস্থান ও কলমবিরতি পালন করে এনবিআরের কর্মীরা। পরে সরকারের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ চেয়ারম্যান অপসারণের জন্য তিনদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে বিক্ষোভ
এছাড়া জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল (Jatiyatabadi Sramik Dal) চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
