অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকারের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি ইউনূস, উপ-রাষ্ট্রপতি বদিউল, উপ-প্রধানমন্ত্রী জামায়াত আমির!

একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus), উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার (Badiul Alam Majumdar) এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে, জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)র আমির ডা. শফিকুর রহমান (Shafiqur Rahman)-কে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদে রাখার প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে।

নাগরিক মতবিনিময় সভায় প্রস্তাবনা উত্থাপন

রোববার (২৬ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব (National Press Club)-এর মানিক মিয়া হলে ‘বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত আগামীর জাতীয় সরকার’ শীর্ষক নাগরিক মতবিনিময় সভায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সভার আয়োজন করে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ (Jatiya Oikya O Sanghoti Parishad)।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মো. নাজিমুল হক। প্রধান অতিথি ছিলেন টাইমস ইউনিভার্সিটির বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. মো. জয়নুল আবেদীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএফ ফরমানুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী, ব্যবসায়ী মো. আলমগীর অপূর্ব এবং কাজী আমিনুল করিম। সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সমন্বয়ক মো. সালাহ উদ্দিন কবির।

প্রস্তাবিত সরকার কাঠামো ও অংশগ্রহণ

সভায় উপস্থাপিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার হবে রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি আনুপাতিক মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার সদস্য বণ্টনে বিএনপি (BNP) পাবে ২৫%, জামায়াতে ইসলামি ২০%, এনসিপি (NCP) ১৫%, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (Islami Andolon Bangladesh) ৫%, গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী ও ব্যক্তিত্ব ১০%, এবং অন্যান্য দল ২৫%।

জাতীয় সনদের প্রয়োজনীয়তা ও প্রশাসনিক ভারসাম্য

বক্তারা বলেন, একটি ভারসাম্যপূর্ণ শাসন কাঠামো গড়ে তুলতে ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন সময়ের দাবি। প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে, যা স্বেচ্ছাচারিতা রোধে কার্যকর হবে।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এই কাঠামো চূড়ান্ত করতে সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণের মতামত নিতে হবে। একটি অংশগ্রহণমূলক ও গণভিত্তিক জাতীয় সরকার গঠন করে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য।

সংলাপের আহ্বান

বক্তারা চলমান গণআন্দোলনের সব অংশীজনকে নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানান এবং বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন এখন সময়ের দাবি।