অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল (Asif Nazrul) আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র বিচার এই সরকারের মেয়াদকালেই শেষ হবে এবং রায়ও প্রদান করা হবে।
গণহত্যার বিচার শুরু, শেখ হাসিনা প্রধান আসামি
সোমবার (২৬ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল লিখেছেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শিগগিরই শুরু হচ্ছে।” তিনি জানান, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পুনর্গঠন সম্পন্ন হয়েছে, গঠিত হয়েছে নতুন তদন্তকারী অফিস ও প্রসিকিউশন ইউনিট। এদের একটি মামলার তদন্ত শেষে আনুষ্ঠানিক চার্জশিট ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে এবং তা আমলে নেওয়া হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, “প্রধান আসামি শেখ হাসিনার মামলার শুনানি খুব শিগগিরই শুরু হচ্ছে। ইনশাল্লাহ্, এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই রায় ঘোষণা করা হবে।”
চানখাঁরপুল হত্যাকাণ্ড মামলার বিচার শুরু
রাজধানীর চানখাঁরপুল (Chankharpul)-এ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ছয়জন নিহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠিত হয়েছে। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ (Dhaka Metropolitan Police – DMP)র সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান (Habibur Rahman)সহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম ও মো. আখতারুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে চারজন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক।
উচ্চপর্যায়ের নির্দেশদাতা হিসেবে নাম এসেছে
এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal) এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)র নাম ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে উঠে এসেছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্তে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি চানখাঁরপুল হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ এপ্রিল তদন্ত সংস্থা আটজনকে অভিযুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করে, যা ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল হয়। এর মধ্য দিয়ে জুলাই বিপ্লবের প্রথম মামলার বিচারিক অধ্যায় শুরু হলো।