প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের পদত্যাগ ঠেকাতে সফল ভূমিকা রাখলেন জামায়াত আমীর

বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় ব্যাপক আলোড়ন। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের তৎপরতার মধ্যেও মূল ভূমিকায় ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami) আমীর ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)।

পদত্যাগের আশঙ্কা ও রাজনৈতিক চাপ

দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনার পেছনে ছিল সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার (General Waqar) এর নির্বাচনকেন্দ্রিক বক্তব্য, বিএনপি (BNP)’র নির্বাচনের দাবির পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party) (এনসিপি)-র সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ নিয়ে বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে হতাশ হন ড. ইউনূস। তিনি উপদেষ্টাদের সতর্ক করে দেন এবং বলেন, সহযোগিতা না পেলে তিনি পদত্যাগ করবেন।

জামায়াতের সক্রিয় কূটনীতি

এমন সংকটে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় জামায়াতে ইসলামী। রাত থেকেই শুরু হয় দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠক। জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান সরাসরি ফোনে কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia) এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারের সঙ্গে। একই সঙ্গে জামায়াত নেতারা এনসিপি নেতাদের সাথেও যোগাযোগ করেন।

সমন্বিত রাজনৈতিক উদ্যোগ

ডা. শফিকের প্রচেষ্টায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ ও এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম পর্দার আড়ালে একাধিক বৈঠক করেন। অন্যদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (Islami Andolon Bangladesh) এর নেতা সৈয়দ ফয়জুল করীম (Syed Faizul Karim) সমমনা দলের নেতাদের পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে একত্রিত করেন, যেখানে টেলিফোনে যোগ দেন জামায়াত আমীরও।

সরকারকে অবহিতকরণ ও স্থিতিশীলতা

জামায়াত নেতারা বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ চালিয়ে যান বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত। ডা. শফিক এসব আলোচনা ও আপডেট একজন উপদেষ্টার মাধ্যমে সরকারের উচ্চ মহলে পৌঁছান। এর পরই পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয় এবং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।

গণমাধ্যমে স্বীকারোক্তি

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (Dr. Abdullah Mohammad Taher) স্বীকার করেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলটি সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং সেনাপ্রধানের সাথেও আলোচনা করেছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর দলটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপও প্রত্যাশা করে।