জামায়াত নেতা আজহারের খালাসে সারজিসের স্ট্যাটাসে বিতর্কের ঝড়

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম (ATM Azharul Islam) খালাস পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjis Alam)। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহার আজকে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।”

গুম-খুনের প্রসঙ্গ টেনে মন্তব্য

ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম আরও লিখেন, “হয়তো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (Salahuddin Quader Chowdhury) কিংবা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী (Delwar Hossain Sayeedi)ও আমাদের মাঝে আজ এভাবেই ফিরে আসতে পারতেন। ফিরে আসতে পারতেন গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হাজারো নাম না জানা ভাই-বোন।”

তিনি বলেন, “কিন্তু সেই সুযোগ আর নেই। আমাদের যাদের সুযোগ হয়েছে এই মা, মাটি ও দেশের জন্য কিছু করার, তারা যেন সৌভাগ্যক্রমে পাওয়া এই সুযোগ এবং আমানতের খেয়ানত না করি।”

আদালতের রায় ও আইনি প্রক্রিয়া

আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ (Chief Justice Syed Refat Ahmed)র নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেন।

এর আগে, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর (Rangpur) অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণসহ মোট ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে। ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড, ৫ নম্বরে ২৫ বছর এবং ৬ নম্বরে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ কিছু অভিযোগে সাজা বহাল রেখে এবং ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করে। এরপর আজহারুল ইসলাম পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আজ তাকে সম্পূর্ণ খালাস দেওয়া হয়।

সারজিসের স্ট্যাটাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সারজিস আলমের মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করলেও, অনেকেই এটিকে বিচারব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে বক্তব্য বলে মনে করছেন।