“আপনারা আমাদের ক্ষমা করে দেবেন”—জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman) দলের পক্ষ থেকে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তিনি বলেন, “মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, আমরাও না। যারা কষ্ট পেয়েছেন বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কাছে আমরা বিনা শর্তে ক্ষমা চাই। আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।”

প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচার চান জামায়াত আমির

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে কাজ করবে।

তিনি বলেন, “আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত, দুঃশাসনমুক্ত, কল্যাণধর্মী ও মানবিক সমাজ। সেই সমাজ গঠনে আপনাদের সমর্থন, সাহচর্য ও দোয়া চাই।”

এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাস রায় প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ টি এম আজহারুল ইসলাম (ATM Azharul Islam)কে খালাস দেওয়া রায়কে কেন্দ্র করে ডা. শফিকুর বলেন, “এই রায় প্রমাণ করেছে, সত্যকে চেপে রাখা যায় না। আল্লাহর কৃপায় সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “এই মামলার বিচারে আন্তর্জাতিক বা দেশের প্রচলিত কোনো আইন মানা হয়নি। রায় এসেছিল ‘ইশারায়’, আদালত নয়, বরং তা ছিল নেতৃত্ব হত্যার প্রয়াস।”

তিনি আরও বলেন, “ব্রিটেনের উচ্চ আদালতও মন্তব্য করেছে—এটা ছিল বিচার ব্যবস্থার গণহত্যা। আজকের রায়ে সেই প্রহসনের পরিণতি জনগণের সামনে এসেছে।”

জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের স্মরণ

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গোলাম আজম, এ কে এম ইউসুফ, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আবদুল খালেক মণ্ডল, আবদুস সুবহান, মীর কাশেম আলী—এদের স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে।”

তিনি বলেন, “তাদের দুনিয়া থেকে সরানো হয়েছে, কিন্তু আমাদের হৃদয় থেকে না। আমরা তাদের কর্মের মাধ্যমে স্মরণ করে যাব।”

জামায়াত নেতাদের ওপর ‘অত্যাচার’-এর অভিযোগ

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের সময়ে জামায়াত নেতাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, পরিবারের ওপর চালানো হয়েছে অবর্ণনীয় অত্যাচার। কিন্তু আমরা প্রতিশোধ নেইনি। আমরা চাই ন্যায়বিচার।”

অন্যান্য উপস্থিত নেতারা

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান (Mujibur Rahman), সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের (Abdullah Md. Taher), ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম (ATM Masum), সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান (Rafiqul Islam Khan), হামিদুর রহমান আযাদ (Hamidur Rahman Azad), আবদুল হালিম (Abdul Halim), এবং এহসান মাহবুব জুবায়ের (Ehsan Mahbub Zubayer)।