দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের আগে সরকার সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) এর গভর্নর আহসান এইচ মঞ্জুর (Ahsan H. Mansur)। ২৭ মে মঙ্গলবার ঢাকা (Dhaka) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
আমানতকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান
গভর্নর বলেন, আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ একীভূত ব্যাংকগুলো হবে শক্তিশালী এবং সরকার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেবে। তিনি বলেন, “আপনারা যেন টাকা উত্তোলন না করেন, কারণ সরকার নিয়ন্ত্রণে থাকলে আমানত নিরাপদ থাকবে।”
তিনি জানান, একীভূতকরণের আগে একটি ব্যাংক রেজল্যুশন ফান্ড গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট জব্দ নয়
আহসান এইচ মঞ্জুর জানান, কোনো ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট এখন পর্যন্ত জব্দ করা হয়নি এবং কোনো ব্যবসা পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। কেবল ব্যক্তিগত কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, ভবিষ্যতেও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থপাচার ও ফেরত আনার উদ্যোগ
পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের সময় পাচার হওয়া অর্থ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, “ওই সময় ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।” তিনি জানান, এই অর্থ ফেরত আনতে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে এবং এর জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরকার এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা সংশোধনের পরিকল্পনা করেছে এবং সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্সের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
একীভূত হতে যাওয়া ছয়টি ব্যাংক
গভর্নর জানান, ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে আর্থিকভাবে দুর্বল ছয়টি ব্যাংককে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে একীভূত করা হবে এবং অস্থায়ীভাবে সেগুলোকে সরকারি মালিকানার আওতায় আনা হবে।
একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো:
– ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (First Security Islami Bank)
– সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (Social Islami Bank)
– ইউনিয়ন ব্যাংক (Union Bank)
– গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক (Global Islami Bank)
– এক্সিম ব্যাংক (EXIM Bank)
– ন্যাশনাল ব্যাংক (National Bank)
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর মধ্যে চারটি ব্যাংক ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিতর্কিত এস আলম গ্রুপ (S. Alam Group) এর নিয়ন্ত্রণে ছিল। এক্সিম ব্যাংক পরিচালনা করতেন ব্যবসায়ী নাজরুল ইসলাম মজুমদার (Nazrul Islam Majumder), আর ন্যাশনাল ব্যাংক ছিল সিকদার গ্রুপ (Sikder Group) এর অধীনে।
