গুলশান থানা বিএনপির নেতা সাধন হত্যাকাণ্ডে পাঁচটি গুলির চিহ্ন, হত্যার মোটিভ জানতে তদন্ত জোরদার

রাজধানীর মধ্যবাড্ডা (Madhya Badda) এলাকার একটি চায়ের দোকানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন গুলশান থানা বিএনপি (Gulshan Thana BNP)র সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান সাধন। ময়নাতদন্তে তার শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

হত্যার ধরন ও তদন্তের অগ্রগতি

ঘটনাটি ঘটে ২৫ মে রাত ১০টার দিকে, যখন সাধন তার তিন বন্ধুর সঙ্গে মধ্যবাড্ডার গুদারাঘাট ৪ নম্বর রোডে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। হঠাৎ গুলশান লেকপাড় থেকে দুই তরুণ হেঁটে এসে খুব কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলির ক্ষত দুটি ছিল ঘাড়ে, দুটি বুকে ও একটি হাতে।

চিকিৎসকরা একটি গুলির অংশ শরীর থেকে উদ্ধার করে ফরেনসিকে পাঠিয়েছেন। আহত অবস্থায় তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (National Institute of Cardiovascular Diseases) নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে চার জনের উপস্থিতি

বাড্ডা থানার (Badda Police Station) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হত্যার সময় চারজন উপস্থিত ছিল—দুজন সরাসরি গুলি করে, বাকি দুজন পাশে ছিল।

তিনি বলেন, “এটি নিশ্চয়ই পূর্বশত্রুতা বা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের ফল। পুলিশ তদন্তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”

পরিবার ও প্রতিবেশীদের বক্তব্য

নিহতের আত্মীয় জিহাদ হোসেন জানান, সাধনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার (Dilruba Akter)কে নিয়ে তিনি গুদারাঘাটে থাকতেন। ২০১৮ সাল থেকে ইন্টারনেট ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। সাধন শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন, তার সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না।

মামলার অগ্রগতি ও সন্দেহভাজন গোষ্ঠী

ঘটনার পর দিলরুবা আক্তার বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, ডিশ ব্যবসা ও কমিশন ভাগাভাগি নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

সূত্র জানায়, বাড্ডা, গুলশান ও বনানীতে সক্রিয় রবিন-ডালিম, মেহেদী ও জিসান গ্রুপ (Jisan Group) এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। নিহতের মামা মাহবুব মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সন্ত্রাসী মেহেদীর দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই বিরোধ থেকেই সাধনকে টার্গেট করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এলাকায় আতঙ্ক

এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে মধ্যবাড্ডায় আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাধনের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।