আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন ষড়যন্ত্র পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস, সুব্রত-মাসুদসহ চার আসামি রিমান্ডে

দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও রাজনৈতিক সংকট তৈরির উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি (BNP), জামায়াত (Jamaat) ও এনসিপি (NCP)’র শীর্ষ নেতাদের টার্গেট করে হত্যার ছক কষেছিল সুব্রত বাইন (Subrata Bain) ও তার বাহিনী। গোয়েন্দা হেফাজতে তাদের দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য—এই পরিকল্পনার পেছনে রয়েছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের (Awami League) শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা।

পরিকল্পনার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন মোল্লা মাসুদ (Molla Masud), আরাফাত ইবনে নাসির (Arafat Ibn Nasir) এবং এমএএস শরীফ (MAS Sharif)।

হুন্ডির মাধ্যমে একটি প্রতিবেশী দেশ থেকে তাদের কাছে বিপুল অর্থ পাঠানো হয়, যা দিয়ে রাজধানীর মগবাজার (Moghbazar), শাহবাগ (Shahbagh), গুলশান (Gulshan) ও বাড্ডা (Badda) এলাকায় কিলার ও শ্যুটারদের সংগঠিত করা হয়। হুন্ডির অর্থ লেনদেন হয় যশোর (Jessore), কুষ্টিয়া (Kushtia) ও ঝিনাইদহ (Jhenaidah) সীমান্ত হয়ে।

হাতিরঝিল থানা (Hatirjheel Police Station) এলাকায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় বুধবার চার আসামির রিমান্ড শুনানি হয়। আদালতে হাজির করা হয় সুব্রত বাইন ও তার তিন সহযোগীকে। বিচারক তাদের ৮ ও ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুনানিতে সুব্রত বাইন নিজেই বলেন, “সত্য কথা লিখবেন, আমি যা তা-ই লিখবেন। আমারও পরিবার আছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেশে এনে আয়না ঘরে আটকে রাখা হয় এবং রড দিয়ে মারধর করা হয়। নিজেকে রক্ষার জন্যই অস্ত্র বহন করতেন বলে দাবি করেন তিনি।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া। বাদল মিয়া বলেন, “সুব্রত বাইন আজ মিডিয়ার সৃষ্টি। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকারের তালিকায় তার নাম ছিল, এরপর কোনো সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।”

গোয়েন্দা পুলিশের রমনা (Ramna) জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস কবির জানান, “জিজ্ঞাসাবাদে রোমহর্ষক তথ্য পাওয়া গেছে। অস্ত্র, গুলি ও টাকার উৎস জানার চেষ্টা চলছে।”

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তিন দলের ভেতরে বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক অবস্থানে যাবে—এই ধারণা থেকেই পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর এক দলের ওপর আরেক দলের দায় চাপানোর পরিকল্পনা ছিল।