নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঘিরে বাংলাদেশ এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা (Jamuna) কেন্দ্রিক আন্দোলন, সেনাপ্রধানের বক্তব্য, এবং বিএনপি (BNP) ও এনসিপি (NCP)’র পরস্পরবিরোধী অবস্থান এই অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (Bangladesh Army)—এই তিন পক্ষের মাঝে সুস্পষ্ট মতভেদ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বলছে, সময়সীমা ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত; কিন্তু সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান (Waqar-uz-Zaman) স্পষ্ট করে বলেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বরে হওয়া উচিত।
এদিকে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain)–কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে দলটি। অপরদিকে, এনসিপি স্থানীয় নির্বাচন ও মৌলিক সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে, এবং জামায়াত ইসলামি (Jamaat-e-Islami) এর সঙ্গেও কিছু জায়গায় মিল রয়েছে।
অনিশ্চয়তার সূচনা ঘটে আবদুল হামিদ (Abdul Hamid) এর দেশত্যাগকে কেন্দ্র করে, যেখানে মামলার পরও তাকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর হাসনাত আবদুল্লাহ (Hasnat Abdullah)’র ডাকে ইসলামী আন্দোলন (Islami Andolan), হেফাজতে ইসলাম (Hefazat-e-Islam)সহ কয়েকটি দলের অংশগ্রহণে যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি হয়। এতে চাপের মুখে সরকার আওয়ামী লীগের (Sheikh Hasina) সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে।
আন্দোলনের চাপে ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের ভাবনা প্রকাশ করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে এক বিশেষ বৈঠকে উপদেষ্টারা জানান, তাঁরা দায়িত্ব পালন করে যাবেন এবং কঠোর অবস্থানে থাকবেন।
সবশেষে ২৪ মে একনেক বৈঠক শেষে ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বসেন। সেখানে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়েও আলোচনা হয়। ইউনূস জানান, নির্বাচন নিয়ে অযৌক্তিক চাপ দেওয়া হলে তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন।
বর্তমানে তারেক রহমান (Tarique Rahman) নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করার দাবি জানিয়ে সরকারকে সতর্ক করেছেন। ২৮ মে বিএনপির সমাবেশেও এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলেন। সমঝোতার মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ সৃষ্টির দাবিতে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।