সরকার ও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার পক্ষপাতমূলক আচরণে নিজের শপথ অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation)-এর নগর ভবনে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “আপনাদের শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, নিজেদের সংশোধন করুন।”
শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক
২০২০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh) বিজয়ী ঘোষিত হন। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইশরাক হোসেন ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাককে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে রায় দেন এবং ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission) গেজেট প্রকাশ করে।
তবে শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এক রিটকারী মামুনুর রশিদ (Mamunur Rashid) হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা ২২ মে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ খারিজ করে দেন এই মর্মে যে, রিটকারীর এ বিষয়ে কোনো এখতিয়ার নেই। পরে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বলেন, ইশরাকের শপথ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
সরকারের প্রতি ইশরাকের বার্তা
ইশরাক বলেন, “সরকার একজন মেয়রকে শপথ পড়াতে ব্যর্থ হলে, তারা কীভাবে তিনশ এমপিকে শপথ পড়াবে?” তিনি আরও বলেন, “আমাদের আন্দোলন ছিল আইনসঙ্গত। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনগণ আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে আমাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আইনের শাসনের জয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমার বিএনপি পরিচয়ের কারণেই বৈষম্য করেছে।” তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরপরই শপথ হওয়া উচিত ছিল। এখন আদালতের নির্দেশ অনুসারে দ্রুত তা সম্পন্ন করতে হবে।”
আইনি লড়াইয়ে প্রতিনিধিত্ব
ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন (Mahbub Uddin Khokon) এবং রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন (Mohammad Hossain)।