বিএনপি (BNP) ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করায় দেশজুড়ে আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনীতি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) নয়াপল্টনে এক সমাবেশে বলেছেন, “ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে”। এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলো দিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া।
কারও কাছে যৌক্তিক, কারও কাছে চাপ তৈরির কৌশল
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party) বলছে, নির্বাচন প্রয়োজন হলেও এর আগে বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হওয়া জরুরি। দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “সংস্কার ছাড়া শুধু নির্বাচনের দিকে এগোলে তা আবারও সংকট সৃষ্টি করতে পারে।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (Islami Andolon Bangladesh) নেতা গাজী আতাউর রহমান জানান, “সরকারকে চাপে ফেলতে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে, যা আমরা ভালোভাবে দেখছি না।”
নির্বাচন চায় সবাই, তবে সময়সীমা নিয়ে মতভেদ
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (Bangladesh Khelafat Majlish) এর মামুনুল হক বলেন, “বিএনপির দাবি এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) এর সময়সীমার মধ্যে বড় পার্থক্য নেই।” ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন করাকে যৌক্তিক মনে করছেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)-র এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, “সব দল তার নিজের মতো অবস্থান নেবে।” দলটি মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন চায়।
দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে গণতান্ত্রিক দলগুলো
গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad) নেতা নুরুল হক নুর বলেন, “বিএনপি যে দাবি তুলেছে সেটি সঠিক। সরকারকে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (Revolutionary Workers Party)-র সাইফুল হক বলেন, “এই সরকারের নির্বাচনের সময় পেছানোর যৌক্তিকতা নেই। এটা জনগণের দাবিও বটে।”
নাগরিক ঐক্যের মধ্যপন্থা
মাহমুদুর রহমান মান্না (Mahmudur Rahman Manna) বলেন, “ডিসেম্বর আর জুনের জেদাজেদির মধ্যে যেতে চাই না। ডিসেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব, তবে তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, নয় মাসের অন্তর্বর্তী সরকারের পারফর্ম্যান্সে সংস্কারের আশা আর অবশিষ্ট নেই।
রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে
বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ মনে করছেন, যদি সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেয় এবং বিএনপি তাদের দাবিতে অনড় থাকে, তাহলে নতুন রাজনৈতিক সংঘাত তৈরি হতে পারে।
সাইফুল হক বলেন, “যারা এই সরকার থেকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সুবিধা নিচ্ছে, তারাই নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়।”