আতিক মোর্শেদ (Atiq Morshed)—ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফায়েজ আহমেদ তৈয়্যব (Fayez Ahmed Tayyab)–এর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা—তার বিরুদ্ধে নগদ (Nagad)-এর অফিসে নিয়মিত যাওয়া, স্ত্রীসহ স্বজনকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া এবং ১৫০ কোটি টাকা বেহাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এসব অভিযোগের বিস্তারিত জবাব দেন।
নগদে যাওয়া ও স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা
আতিক মোর্শেদ দাবি করেন, তিনি এখন পর্যন্ত মাত্র দুইবার নগদ অফিসে গেছেন, এবং তা ছিল অফিসিয়াল প্রয়োজনে। তার বিরুদ্ধে নগদের সিইও চেয়ারে বসার যে অভিযোগ এসেছে, তা মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন তিনি। ওই সময় ডাক বিভাগ (Postal Division)–এর কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
স্ত্রীর চাকরির বিষয়ে আতিক বলেন, “আমার স্ত্রী নিজের মেধা ও যোগ্যতায় আবেদন করেছেন এবং নগদ কর্তৃপক্ষ তার পূর্বের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে তাকে শর্তসাপেক্ষে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়েছে।” তিনি জানান, তার স্ত্রী আগে গুলশানের একটি স্বনামধন্য ল’ফার্মে তিন বছর কাজ করেছেন এবং একাডেমিক রেজাল্টও কর্পোরেট চাকরির জন্য যথেষ্ট ছিল।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ও হিসাব
নগদ থেকে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সম্পর্কেও আতিক মোর্শেদ বিস্তারিত তথ্য দেন। তিনি জানান, ডাক বিভাগ নগদের ২ মাসের হিসাব চায় এবং তাতে দেখা যায়, আনুমানিক ৪৩ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে কোম্পানির পরিচালনা ব্যয়, বেতন-ভাতা, ভাড়া ও ভেন্ডর বিল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
তিনি বলেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সিইওকে ইতিমধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক ফরেনসিক অডিট করার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আদালতের আদেশ ও প্রশাসক পরিবর্তন
২০২৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) নগদে প্রশাসক নিয়োগ করে। এর বিরুদ্ধে নগদের স্বতন্ত্র পরিচালক মো. শাফায়েত আলম (Md. Shafayet Alam) হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়। পরে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৭ মে হাইকোর্টের রায় ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে।
আতিক মোর্শেদ জানান, ওইদিন থেকেই পরিস্থিতি জটিল হয় এবং শাফায়েত নিজেকে নগদের সিইও ঘোষণা করেন। বিষয়টি জানার পর ডাক বিভাগ আলোচনা করে শাফায়েতের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ নেয়। সিআইডি (CID)–এর সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে জানা গেছে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
১৮ মে সিআইডি নগদের ডেপুটি সিইও মুইজ সাহেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তার ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে এবং তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে। এরপর ২৯ মে আবু তালেব (Abu Taleb)–কে নতুন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আতিক মোর্শেদের বক্তব্য
“আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমার মন্ত্রণালয় ও সরকারের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছি,”—বলেন আতিক মোর্শেদ। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে মানবজমিন (Manab Zamin) পত্রিকাকে যথাযথ প্রমাণসহ রিপোর্ট প্রকাশের আহ্বান জানান।