কদরুদ্দিন শিশির (Kadruddin Shishir), ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেস (Agence France-Presse) এর সাবেক ফ্যাক্টচেকার এবং ‘দ্য ডিসেন্ট’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক, সম্প্রতি মানবজমিন (Manab Zamin) পত্রিকায় প্রকাশিত ‘যেভাবে বেহাত নগদের শতকোটি টাকা’ শিরোনামের প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিশির লিখেন, “আমি আগেই ডিসক্লেইমার দিচ্ছি যে, এই রিপোর্টে দেয়া তথ্যগুলো সত্য নাকি অসত্য তা আমি যাচাই করিনি, এবং অল্প সময়ে এত তথ্য যাচাই সম্ভবও নয়। আমার এই লেখাটি কোন ‘ফ্যাক্ট চেক’ নয়।”
তিনি জানান, প্রতিবেদনটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে এবং এতে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একজন চরিত্র আতিক মোর্শেদ (Atiq Morshed)। তাঁর বিরুদ্ধে একটি ঘটনায় দুর্নীতির টাকার পরিমাণ নিয়ে দরকষাকষিতে জড়ানোর তথ্য তিনি পেয়েছেন, যদিও যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে তা প্রকাশ করেননি।
তিনি আরও জানান, আতিক মোর্শেদের স্ত্রী নগদ (Nagad)-এর একটি উঁচু পদে নিযুক্ত হয়েছেন, এবং তা নিয়ে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। ফলে মানবজমিনে তাঁর বিষয়ে উল্লিখিত তথ্যগুলো সবই মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম।
তবে কদরুদ্দিন শিশির দাবি করেন, “এই রিপোর্ট মানবজমিনের নিজস্ব অনুসন্ধান নয় বরং গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি একটি রেডিমেইড রিপোর্ট।” তিনি ফেসবুকে কয়েকটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন যেখানে মানবজমিনের প্রতিবেদন ও গোয়েন্দা সংস্থার একটি তথাকথিত ‘চোথা’–র পাঠ্যাংশ হুবহু মিলে গেছে বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আমি একটি বড় পত্রিকার একজন স্বনামধন্য রাজনৈতিক রিপোর্টারের কাছ থেকে গোয়েন্দা সংস্থা সরবরাহকৃত ‘চোথা’টি সংগ্রহ করেছি।” তিনি স্ক্রিনশটে লাল বক্স দিয়ে চিহ্নিত করেছেন যে, কীভাবে মানবজমিনের প্রতিবেদন ও গোয়েন্দা সংস্থার পিডিএফ তথ্যের অনুচ্ছেদ মিলিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া কদরুদ্দিন শিশির প্রশ্ন তুলেছেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী (Matiur Rahman Chowdhury) সম্পাদিত পত্রিকায় এ ধরনের রেডিমেইড রিপোর্ট প্রকাশ সাংবাদিকতার নৈতিকতার সঙ্গে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ।
তিনি মন্তব্য করেন, “এটা এইজন্য নয় যে, রিপোর্টের সব তথ্য মিথ্যা, বরং এ কারণে যে আমাদেরকে সংবাদ প্রতিবেদনের নামে গোয়েন্দা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে, যা পাঠক হিসেবে আমাদের প্রতারণার শিকার করেছে।”