বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ ইস্যুতে এতদিন নীরব থাকার পর মুখ খুললেন আসামের (Assam) মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। তিনি জানান, রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল (Foreigners Tribunal) যেসব মানুষকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করেছে, তাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (India-Bangladesh border) দিয়ে বাংলাদেশে পুশ করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে।
শুক্রবার এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারির একটি আদেশে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, মাতিয়া বন্দি শিবিরে (Matia Detention Camp) আটক ঘোষিত বিদেশিদের ফেরত পাঠাতে পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এরপর থেকেই ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পরিবারগুলোর অভিযোগ: প্রিয়জন কোথায় জানি না
২৩শে মে থেকে বিদেশি ঘোষিত মানুষদের রাজ্যজুড়ে আটক করা হয়। খবরে বলা হয়, অনেক পরিবারের অভিযোগ—তাদের প্রিয়জন কোথায় আছেন তা জানানো হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেকে তাদের চেনার কথা জানিয়েছেন। এ পর্যন্ত বহু মানুষকে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
পুশব্যাক মানে কী?
‘পুশব্যাক’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় সেই প্রক্রিয়ায়, যেখানে কাউকে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ছাড়াই সীমান্ত পার করে অন্য দেশে পাঠানো হয়। এটি স্বাভাবিক প্রত্যাবাসনের সম্পূর্ণ বিপরীত।
আদালতের ভাষ্য: ফেরত পাঠানোর বিকল্প নেই
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অভয় ওকা এবং উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চ জানায়, যেসব ব্যক্তি মাতিয়াতে বন্দি এবং যাদেরকে এক থেকে ৬৩ পর্যন্ত সিরিয়াল নম্বর দেয়া হয়েছে, তাদের পরিচয় জানা গেছে। যেহেতু রাজ্য সরকার জানে তারা একটি নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক, তাই তাদের ফেরত পাঠাতে বিলম্বের কোনো যুক্তি নেই। আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে।
যারা আপিল করেনি, তাদেরকেই ফেরত পাঠানো হচ্ছে
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “যারা এখনও সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টে আপিল করেননি, তাদেরকে আমরা পুশব্যাক করছি। কিন্তু যাদের মামলা বিচারাধীন, তাদের বিরক্ত করা হচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষকে ফেরত পাঠাবে। যারা বিদেশি হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন কিন্তু এখনও চ্যালেঞ্জ করেননি, তাদের আর আসামে থাকার সুযোগ থাকবে না।