নগদ (Nagad)–এর অর্থ সরানো এবং স্ত্রীকে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আতিক মোর্শেদের (Atiq Morshed) বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এই তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব (Fayez Ahmad Tayyeb)।
স্বজনপ্রীতি ও কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট
ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, “আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। নগদের অ্যাক্টিং সিইও এ বিষয়ে প্রেস রিলিজে বলবেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনায় অন্যায়ভাবে সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আমার নাম টেনে আনা হয়েছে। এটা নিন্দনীয়।”
ভুয়া ই-কেওয়াসি ও আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ
তার দাবি, “সাবেক সরকার আমলে নগদে ভুয়া ই-কেওয়াসি, জাল এজেন্ট নিয়োগ ও অবৈধ ক্যাশব্যাকের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। ডাক বিভাগ (Postal Department) সূত্রে জানা গেছে, ট্রান্সকাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টের বিপরীতে অবৈধ ই-মানি তৈরি হয়েছে প্রায় ৬৪৫ কোটি টাকার।”
তিনি লিখেছেন, “আমি নিজেই তদন্তকারী সংস্থাকে এসব বিষয়ে প্রেজেন্টেশন দিয়েছি। বরং সন্দেহভাজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুরোধও করেছি। অথচ অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমি তাকে রক্ষা করেছি—এটা ডাহা মিথ্যা।”
মিডিয়ার ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “আমি মানবজমিনের নিয়মিত কলাম লেখক, অথচ আমার বক্তব্য না নিয়েই বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে। এমন সাংবাদিকতা নৈতিক কি না, সেটার বিচার জনগণ করবে।”
তিনি বলেন, “প্রোপাগান্ডা ছড়াতে কিছু মিডিয়া ও এজেন্সি কাজ করছে, যাতে বলা হচ্ছে ১৫০ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। অথচ আমি নিজে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের বলেছি, কিপিএমজি’র ফরেনসিক রিপোর্ট নিয়ে আপত্তি আছে, কারণ তারা প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট।”
প্রতিযোগিতা ও মনোপলি রোধের পরামর্শ
বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) কর্তৃক নগদে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “রেগুলেটর যদি অপারেশন চালায়, তাহলে প্রতিযোগীদের মনোপলি সুবিধা হয়। এটা অর্থনীতির জন্য হুমকি।”
তিনি দাবি করেন, “নগাদ দেশের ৯ কোটির বেশি মানুষের সেবার সঙ্গে জড়িত। এটি বন্ধ হলে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোয় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
বিএফআইইউ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা
তিনি আরও জানান, বিএফআইইউ (BFIU)-কে ভুয়া ই-কেওয়াসি, অনলাইন জুয়া, অবৈধ এজেন্ট ও সীমান্তে হুন্ডি রোধে জিও-ফেঞ্চিংসহ বিভিন্ন টাস্ক দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।