একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়: বদিউল আলম মজুমদার

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) (Shushashoner Jonno Nagorik) এর সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের (National Consensus Commission) সদস্য বদিউল আলম মজুমদার (Badiul Alam Majumdar) বলেছেন, “একই ব্যক্তি যদি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে।” তিনি বলেন, “আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনেক বেশি। আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকলে স্বৈরাচারী হয়ে উঠা অস্বাভাবিক নয়।”

শনিবার (৩১ মে) রংপুর (Rangpur) শহরের আরডিআরএস মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সংলাপটির আয়োজন করে সুজনের রংপুর মহানগর কমিটি।

ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে সতর্কবার্তা

বদিউল আলম বলেন, অতীতে দেখা গেছে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রক্ষমতার বিভাজনের নীতি লঙ্ঘিত হয়। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অনেক সময় মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত নয়, বরং এককভাবে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন। রাষ্ট্রপতিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য হন।”

তিনি আরও জানান, “প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রায় সব সিদ্ধান্তই রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত হিসেবে গণ্য হয়। এর ফলে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে না।”

জাতীয় সনদ ও সংস্কার প্রস্তাবনা

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র একটি ঐতিহাসিক দলিল। আমরা চাই, জাতীয় সনদের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাবনা প্রণয়ন হোক। সব রাজনৈতিক দল এতে স্বাক্ষর করবে এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করবে।”

অংশগ্রহণকারীদের সুপারিশ

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ সরকার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, আইনজীবী জোবাইদুল ইসলাম, সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহা প্রমুখ।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু।