যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে বিতর্ক, কিন্তু ভারতের সুবিধা গ্রহণেই নীরবতা: দ্বৈত নীতির সমালোচনা

ভারতের সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা নিয়ে দেশ বিক্রির অভিযোগ ওঠে না, অথচ যুক্তরাষ্ট্র (United States) ইস্যুতে এমন অভিযোগ তুলছেন অনেকে—এমন দ্বৈত নীতির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে এক মতামতধর্মী প্রতিবেদন থেকে।

ভারতের ট্রানজিট সুবিধা: বিনামূল্যে ব্যবহার

বাংলাদেশ (Bangladesh) এর ভেতর দিয়ে ভারতের ট্রেন চলাচল করছে ট্রানজিট সুবিধায়—তাও বিনামূল্যে। ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেলসংযোগ প্রকল্পে ভারত পেয়েছে ট্রানজিট সুবিধা, যদিও এই প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবুও তখন ‘দেশ বিক্রি’র কোনো অভিযোগ ওঠেনি।

নদী ও পানির ন্যায্য হিস্যা: অব্যাহত সংকট

ফেনী নদী (Feni River) বাংলাদেশের অংশ হলেও ভারত সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে পানি তুলে নিচ্ছে। একইভাবে তিস্তা নদী (Teesta River) শুকিয়ে কৃষির ক্ষতি সাধন করছে ভারত। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের সঙ্গে পানি চুক্তির চেষ্টা করলেও ভারত সেই প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। decades পরেও ফারাক্কা (Farakka) বাঁধ থেকে ন্যায্য পানি আদায় সম্ভব হয়নি।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রশ্নে প্রভাব

ভারতের চাপে বাংলাদেশ আধুনিক যুদ্ধবিমান কিনতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি চট্টগ্রাম (Chattogram)মংলা বন্দর (Mongla Port) ব্যবহারের নামে বঙ্গোপসাগরের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট ও বৈদেশিক সহায়তা

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার (Myanmar) সীমান্ত লঙ্ঘন করে মর্টার ও হেলিকপ্টার পাঠালেও বাংলাদেশ কোনো জবাব দিতে পারেনি। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে রোহিঙ্গারা থেকে যাচ্ছে—কোনো সরকারই তাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি। এখন যখন বিকল্প পথে সমস্যার সমাধানে বিদেশি সহায়তা আনা হচ্ছে, তখন “দেশ বিক্রি”র নতুন স্লোগান উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্রবিরোধিতা বনাম বাস্তবতা

প্রতিবেদনটিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে—ড. মুহাম্মদ ইউনুস কি রোহিঙ্গা এনেছেন? যাঁরা আজ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁরাই তো রোহিঙ্গাদের খাওয়া, চিকিৎসা, শিক্ষার জন্য পাওয়া অনুদানের সুবিধাভোগী। তাহলে সেই অনুদান বাতিল করে ভারতকে সহায়তা দিতে বলা হচ্ছে না কেন?

উপসংহার: একচোখা নীতির সমালোচনা

জাতীয় স্বার্থের নামে একচোখা নীতিকে দেশপ্রেম নয় বরং আত্মঘাতী চাটুকারিতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মতামতটিতে দ্বৈত মানদণ্ডের বিপক্ষে সরব হওয়া ও যুক্তিভিত্তিক আলোচনা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়।