এপিএস বরখাস্ত হলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি রয়ে গেছে তিন কর্মকর্তার সিন্ডিকেটে

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (Local Government Ministry) থেকে এপিএস মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে বরখাস্ত করলেও দুর্নীতি কমেনি—বরং মন্ত্রণালয়ের সবকিছু এখন চলছে একটি শক্তিশালী তিন সদস্যের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপদেষ্টার পিএস আবুল হাসান (Abul Hasan), প্রশাসন-১ শাখার উপসচিব আকবর হোসেন (Akbar Hossain) এবং প্রশাসন অধিশাখার যুগ্মসচিব ড. মো. মনিরুল ইসলাম (Dr. Md. Monirul Islam)।

সিন্ডিকেটে নিয়ন্ত্রিত পুরো মন্ত্রণালয়

তিন কর্মকর্তার এই চক্র স্থানীয় সরকার বিভাগের যাবতীয় নথি, প্রকল্প অনুমোদন ও দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, এই চক্রের অনুমতি ছাড়া কোনো নথিই সচিবের টেবিলে পৌঁছায় না, এমনকি সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী (Rezaul Maksud Zahidi)ও স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম।

অতীতের ক্ষমতাধরদের উত্তরাধিকার

আকবর হোসেন, আওয়ামী আমলে চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী (Noor-E-Alam Chowdhury) এবং পরে দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকা সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ (Helal Uddin Ahmed)–এর পিএস ছিলেন। এসব সম্পর্কের সূত্র ধরে এখনো তিনি একই দপ্তরে দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে বহাল রয়েছেন, নানা বদলির পরও।

দুর্নীতির উৎসেই উপদেষ্টা?

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan) ছিলেন যুব ও ক্রীড়া ও পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর আশীর্বাদেই সিন্ডিকেট পরিচালিত হচ্ছে। তাঁর পিএস আবুল হাসান ও আকবর হোসেন—দুজনেরই বাড়ি সাতক্ষীরায়, একই জেলার মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ (Dr. Sheikh Abdur Rashid)–এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

শতকরা ১০ ভাগ কমিশনের অভিযোগ

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিটি প্রকল্প অনুমোদনে সিন্ডিকেটকে শতকরা ১০ ভাগ কমিশন দিতে হয়। এ কারণেই অধীনস্ত দপ্তরগুলোর পক্ষ থেকে নতুন প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর হার কমে গেছে। পূর্বে ওয়াসা (WASA) নিয়োগ কেলেঙ্কারিসহ নানা দুর্নীতির পেছনেও ছিল এই সিন্ডিকেট।

এপিএস মোয়াজ্জেমের অপসারণের পরও অপরাধ কমেনি

মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে দুদক (ACC) তদন্ত শুরু করেছে। তবে তার অপসারণের পর সিন্ডিকেট আরো স্বাধীনভাবে অপকর্ম চালাচ্ছে। আগের মতবিরোধের সুযোগ নেই, এখন তারা নিজেরা পুরোপুরি সমঝোতায়।