ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালে শুনানি শুরু হয় এবং তা সরাসরি সম্প্রচার করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি (BTV)।
বিশাল আকারের অভিযোগপত্র
আদালত সূত্রে জানা যায়, আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি ১৩৫ পৃষ্ঠার হলেও অভিযোগের সমর্থনে দাখিল করা হয়েছে মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার প্রমাণাদি—যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, দালিলিক প্রমাণ, ভিডিও ও অডিও কলের বিবরণ। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৮১ জনকে।
অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিরা
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও অভিযুক্ত করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal) এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)-কে।
তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রসিকিউশনের মন্তব্য
গত ১২ মে তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম (Tajul Islam) জানান, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে চালানো আন্দোলন দমনে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে নির্বিচারে হত্যার দায় শেখ হাসিনার ওপর বর্তায়।
তিনি আরও বলেন, তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা ও উসকানির পাঁচটি অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বিচার ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা, যাতে মানবতাবিরোধী অপরাধ আর না ঘটে।
বর্ষা বিপ্লব ও সংগঠিত সহিংসতা
২০২৪ সালের এই আন্দোলন ‘বর্ষা বিপ্লব’ বা ‘মনসুন বিপ্লব’ নামে পরিচিত। এটি দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগ (Awami League)-এর অঙ্গসংগঠনগুলো ব্যাপক এবং পরিকল্পিত সহিংসতায় জড়িত ছিল। ট্রাইব্যুনালে উত্থাপিত অভিযোগে এই সহিংসতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বিচার সেই আদালতে, যা একসময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত হয়েছিল
讠শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে, সেটি গঠিত হয়েছিল তারই সরকারের আমলে মুক্তিযুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য।