বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Khandaker Mosharraf Hossain) দাবি করেছেন, শুধু বিএনপি নয়—দেশের ৫২টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচনের উপযুক্ত সময় নিয়ে যুক্তি
খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা বলেছি, নির্বাচন ডিসেম্বরেই হলে নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং জনগণের জন্য সুবিধাজনক হবে। আমাদের এই যুক্তির পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কিন্তু সরকার যদি ভিন্ন কোনো যুক্তি দেখায়, সেটাও তারা ব্যাখ্যা করুক ও নির্বাচন ঘোষণা করুক।”
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) জাপানে গিয়ে বলেছেন, শুধু বিএনপি নির্বাচন চায়। কিন্তু আজকের পত্রিকাতেই ৫২টি দলের বক্তব্য এসেছে—সবাই ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়। তাহলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কারণ কী?”
বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার দাবি
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, “যেসব উপদেষ্টারা অতিরিক্ত বক্তব্য দিয়ে বিতর্কিত হচ্ছেন, তাদের বাদ দিয়ে একটি ছোট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনই হবে গ্রহণযোগ্য উপায়।”
তিনি মনে করেন, বর্তমান সংকট নির্বাচন নিয়ে, এবং সবাই চায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। “আমরা আশা করি প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়টি উপলব্ধি করবেন,” বলেন তিনি।
নির্বাচন জুনে সম্ভব নয়: যুক্তি ও ব্যাখ্যা
তিনি বলেন, “জুন মাসে নির্বাচন অসম্ভব। কারণ ডিসেম্বরের পর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা ও ঈদ পড়ে। এরপর আসে পাবলিক পরীক্ষা—এসএসসি, এইচএসসি—যেগুলো পেছানো যায় না। স্কুল-কলেজগুলোই ভোটকেন্দ্র হয়। তারপর আসে বর্ষাকাল। এ বছর মে মাসেও অতিবৃষ্টি হয়েছে, যা পুরো জুনজুড়ে চলবে।”
তাই তিনি বলেন, “ডিসেম্বরেই নির্বাচন করতে হবে। সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে সরকার তা ঘোষণা করুক।”
ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে হতাশা
মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “দেশের জনগণ অনেক বিশ্বাস নিয়ে আপনাকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মেনে নিয়েছে। আপনি কেন বিভ্রান্তি তৈরি করছেন?”
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হল (Abdus Salam Hall)-এ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (Combined Professional Council) আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, আনহ আখতার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) একেএম শামসুল ইসলাম শামস, সৈয়দ আলমগীর, সেলিম ভূঁইয়া, জাকির হোসেন, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, শামীমুর রহমান শামীম, একেএম মহসিন, রাশেদুল হক, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, ফখরুল আলম, সাইফুজ্জামান সান্টু, জিয়াউল হায়দার পলাশ, জাহানারা বেগম, একেএম মুসা, তানভীরুল আলম, মির্জা লুৎফুর রহমান লিটন প্রমুখ।