জাপান সফর শেষে ফিরলেন ড. ইউনূস, আসছে ১.৬৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ও ৯টি সমঝোতা

চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। শনিবার (৩১ মে) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Hazrat Shahjalal International Airport)-এ তিনি পৌঁছান। তার সফরের সময় জাপান (Japan)-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রধান অর্জন: অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও সহায়তা

সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার, টোকিওতে ড. ইউনূসের সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা (Fumio Kishida) দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় নেতা ২০২৫ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (EPA) স্বাক্ষরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

জাপান বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১.৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া, সফরের সময় মোট ৯টি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়।

মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শ্রমবাজার

বৃহস্পতিবার টোকিওর হীরা কাউচো, চিওদা সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত মানবসম্পদ সেমিনারে আরও দুটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হয়। এতে লক্ষ্য ছিল দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জাপানে বাংলাদেশের কর্মীদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি। জাপানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে ১ লাখ শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

এই উদ্যোগ জাপানের শ্রমসংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ

শুক্রবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনারে ড. ইউনূস বক্তৃতা দেন। এই সেমিনারে আরও ছয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যার লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

সার্বিক মূল্যায়ন

প্রধান উপদেষ্টার সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনীতি, বাণিজ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফর শুধু সম্পর্ক দৃঢ় করার ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত ভিত্তিও তৈরি করেছে।