ভারতবিরোধী অবস্থান কি বাবরের নিষ্ক্রিয়তার কারণ? বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন

ভারত সম্পর্কে স্পষ্ট বিরূপ মন্তব্যের পর থেকে লুতফুজ্জামান বাবর (Lutfozzaman Babar)-কে আর রাজনীতির ময়দানে দেখা যাচ্ছে না—এমন বাস্তবতা উদ্বেগ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, বিএনপির ভেতরে ভারতের প্রতি অবস্থান ঘিরে ভিন্নমতের নেতাদের কী পরিণতি হয়, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ভারতকে ‘আজন্ম শত্রু’ বলার পরপরই আড়ালে বাবর

সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তির পর বাবর একটি আলোচিত মন্তব্য করেন—”ভারত আমার আজন্ম শত্রু”। এরপর থেকেই এই সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে আর গণমাধ্যম বা দলের আনুষ্ঠানিক মঞ্চে দেখা যাচ্ছে না। তিনি যেন হঠাৎ করেই বিএনপির রাজনীতি থেকে গায়েব হয়ে গেছেন।

বাবরের এই নিরবতা অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে—ভারতবিরোধী বক্তব্যের ফলেই কি তাকে পরিকল্পিতভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে?

ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কিত অবস্থানে সালাহউদ্দিন

অন্যদিকে, সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) দীর্ঘ সময় ভারতে (India) অবস্থান করার পর ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট দেশে ফেরেন এবং ফিরে এসেই দলের আলোচনায় উঠে আসেন। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠার পাশাপাশি নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন—যা অনেক বিশ্লেষকের মতে, ভারতীয় কৌশলের প্রতিফলন।

এই বাস্তবতায় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—বিএনপি কি ভারতকে সন্তুষ্ট করতে চায়? ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা কি বিএনপির ভবিষ্যতের জন্য আত্মঘাতী হবে না?

ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও জন-মানসের প্রতিক্রিয়া

যদি বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো ভারতপন্থী অবস্থানে যায়, তবে এতে দেশের জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে বলে মত দিয়েছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এখনকার জনগণ “আগের মতো মুলা ঝুলানো” কথায় আর বিভ্রান্ত হয় না—তারা এখন সচেতন, তথ্যপ্রবাহে যুক্ত, এবং জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংবেদনশীল।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ভাষায়, “ভারতের প্রতি নীতিগত অবস্থান নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব বিএনপিকে আরও দুর্বল করতে পারে। জনগণ এখন আত্মসম্মানবোধের রাজনীতি চায়।”

উপসংহার

লুতফুজ্জামান বাবরের নিস্ক্রিয়তা এবং সালাহউদ্দিন আহমেদের সক্রিয়তা—এই দুই বিপরীত চিত্রে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হচ্ছে না। দলটি কী আদর্শিক অবস্থানে থাকবে, এবং কীভাবে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে—তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে।