দেশব্যাপী আবারও শুরু হয়েছে উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর জাতীয় পরিচয়পত্র তথা স্মার্ট কার্ড (Smart Card) বিতরণ কার্যক্রম। শুরুতে ঢাকা (Dhaka) থেকে এই কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে এটি সারা দেশে বিস্তৃত। স্মার্ট কার্ড গ্রহণের সময় নাগরিকদের পুরনো কার্ড জমা দেওয়ার পাশাপাশি দিতে হচ্ছে দুই হাতের ১০ আঙুলের ছাপ এবং চোখের মণির (আইরিশ) ছবি।
কেন নেওয়া হচ্ছে ১০ আঙুলের ছাপ ও আইরিশ ছবি?
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (Election Commission of Bangladesh) জানিয়েছে, পূর্বের জাতীয় পরিচয়পত্রে কেবল হাতের বৃদ্ধাঙুল ও তর্জনির ছাপ নেওয়া হতো। ২০০৮ সালে এই ছাপ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অনেক ভুলত্রুটি ছিল। এছাড়া বয়স বৃদ্ধির ফলে আঙুলের ছাপে পরিবর্তন আসতে পারে।
এই পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, নাগরিকদের ১০ আঙুলের পূর্ণ ছাপ এবং চোখের মণির ছবি (আইরিশ স্ক্যান) গ্রহণ করা হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এই ধরনের বায়োমেট্রিক তথ্যের চাহিদা ও গ্রহণযোগ্যতা বেশি। বিশেষ করে বেশি বয়সী নাগরিকদের আঙুলের ছাপ স্পষ্ট না থাকার কারণে ১০ আঙুলের ছাপ প্রয়োজন হয়।
আইনগত দিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০–এ বলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিকের বায়োমেট্রিক বৈশিষ্ট্য—যেমন: আঙুলের ছাপ, হাত ও তালুর ছাপ, চোখের কণিকা (আইরিশ), মুখাবয়ব, ডিএনএ, স্বাক্ষর ও কণ্ঠস্বর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে।
তবে বাস্তবে এখনো এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণ হয়নি।
কার্ড উৎপাদন সক্ষমতা
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের হাতে রয়েছে ১০টি উন্নত মেশিন, যা প্রতিমাসে ৫০ লাখ স্মার্ট কার্ড তৈরি করতে সক্ষম। প্রতিটি মেশিনে প্রতি ঘণ্টায় ৯৫০টি কার্ড উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
উপসংহার
বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় পরিচয়পত্রকে আরও নির্ভরযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।