ভারতের হুমকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে পাকিস্তান

পাকিস্তান (Pakistan) সাম্প্রতিক সময়ে ভারত (India)–পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (UN Security Council) এর নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতের কার্যক্রমকে ‘আঞ্চলিক শান্তির হুমকি’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। সোমবার (২ জুন) নিউইয়র্ক (New York)–এ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরল পাকিস্তান

বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি (Bilawal Bhutto-Zardari) নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সামনে ভারতের শহরাঞ্চল লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ এবং সিন্ধু পানি চুক্তি (Indus Waters Treaty) স্থগিতের বিষয়টি তুলে ধরে। তারা বলেন, ভারতের এসব কর্মকাণ্ড দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিলাওয়াল বলেন, “গবেষণা ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। পাকিস্তান দায়িত্বশীল ও জাতিসংঘ সনদের আলোকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংঘাত-পরবর্তী সমাধান নয়, বরং সংঘাত-পূর্ব প্রতিকারে জোর দিতে হবে।”

প্রতিনিধিদলের সদস্য ও বৈঠকের পরিসর

উচ্চপর্যায়ের এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন—হিনা রব্বানি খার, খুররম দস্তগীর, শেরি রেহমান, মুসাদিক মালিক, ফয়সাল সাবজওয়ারি, বুশরা আনজুম বাট, জালিল আব্বাস জিলানি, এবং তেহমিনা জানজুয়া। তারা চীন (China)–এর জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ফু কং (Fu Cong)–এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিষয়ে আলোচনা করেন।

অন্যান্য কূটনৈতিক তৎপরতা

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (Antonio Guterres) এবং সাধারণ পরিষদের সভাপতির সঙ্গেও প্রতিনিধিদলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তারা ওআইসি (OIC)–র দূতদের সম্মিলিত অধিবেশনেও বক্তব্য দেবেন।

এছাড়া, প্রতিনিধি দলটি মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও (Marco Rubio) ও থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বিশ্লেষকদের সঙ্গে বৈঠক করবে।

ভারতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান

বিলাওয়াল আরও বলেন, “কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী সমাধান জরুরি। ভারত পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে শান্তি চায়।”

মস্কো সফর

এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সৈয়দ তারিক ফতেমী (Syed Tariq Fatemi)–এর নেতৃত্বে আরও একটি প্রতিনিধি দল ২ জুন থেকে মস্কো (Moscow) সফরে রয়েছে। এই সফরের উদ্দেশ্যও একই—আন্তর্জাতিক পরিসরে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরা এবং ভারতের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিষয়ে সমর্থন সংগ্রহ করা।