গভীর রাতে জারি হওয়া এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman)সহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিকের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে। অধ্যাদেশে এসব নেতাদের পরিচয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে।
স্বীকৃতি বাতিল: যাদের প্রভাবিত করেছে
স্বীকৃতি হারানোদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম (Syed Nazrul Islam), তাজউদ্দীন আহমদ (Tajuddin Ahmad), এম মনসুর আলী (M. Mansur Ali), এএইচএম কামারুজ্জামান (A.H.M. Qamaruzzaman)সহ গণপরিষদের সদস্যরা।
গতকাল রাত ১১টায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (Jatiyo Muktijoddha Council) অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে প্রকাশ করে। এতে আরও চার শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ধারীকেও ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে পুনঃসংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন বিদেশি পেশাজীবী, মুজিবনগর সরকার (Mujibnagar Government) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র (Swadhin Bangla Betar Kendra)র শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল (Swadhin Bangla Football Team)।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০২২’-এ যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের তালিকা হালনাগাদ করে সহযোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে স্বীকৃতি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত থাকলেও পরে রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত পাল্টানো হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের পর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় (Ministry of Liberation War Affairs) সচিব ইসরাত চৌধুরী (Israt Chowdhury) জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত ও আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করা হয়।
পূর্বের বিতর্ক ও প্রক্রিয়া
ফেব্রুয়ারি-মার্চে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি আলোচিত হয়। জানা যায়, ৬ মে চার শতাধিক নেতার স্বীকৃতি পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু পরে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তে তা পরিবর্তন হয়।
অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীর সংজ্ঞায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বে “লাল মুক্তিবার্তা স্মরণীয় যারা বরণীয় যারা” ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত প্রবাসী সংগঠক, গণপরিষদ সদস্য, বিসিএস অফিসার, সাংবাদিক ও শিল্পীরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতেন। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, তারা আর সেই স্বীকৃতি পাচ্ছেন না।
ফারুক-ই-আজম (Faruk-e-Azam) খসড়ায় স্বাক্ষর করেন, যার ভিত্তিতে এই অধ্যাদেশের চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।