বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সোনা ও মোবাইল আনে কড়াকড়ি: নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা জারি

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পরদিন সরকার নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা (Baggage Rules) জারি করেছে, যেখানে বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সোনা (Gold), মোবাইল ফোন (Mobile Phone) ও অন্যান্য পণ্য আনার বিষয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। নতুন বিধিমালায় একদিকে যেমন কড়াকড়ি বেড়েছে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য সময়সীমা ও ঘোষণার সুযোগও বাড়ানো হয়েছে।

সোনা আনে সীমাবদ্ধতা

পূর্বে প্রতিবার ফেরা সময়ে যাত্রীরা সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারতেন। এখন থেকে বছরে কেবল একবারই একটি বার আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাও নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে। নতুন হার অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার জন্য শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে ৫,০০০ টাকা। ফলে একটি সোনার বারের ওপর শুল্ক দিতে হবে প্রায় ৫০,০০০ টাকা, যা আগের ৪,০০০ টাকা হারের তুলনায় বেশি।

সোনার গয়নার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত

আগে বিনা শুল্কে যতবার খুশি ১০০ গ্রাম পর্যন্ত গয়না আনা যেত। এখন থেকে বছরে মাত্র একবারই ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না আনার সুযোগ থাকবে, তাও শুল্কমুক্তভাবে।

মোবাইল ফোন আনার নতুন নিয়ম

বিদেশফেরত যাত্রী এখন থেকে বছরে কেবল একটি নতুন মোবাইল ফোন শুল্ক ও কর ছাড়া আনতে পারবেন। তবে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন আনার পুরনো নিয়ম বহাল থাকবে। পূর্বে প্রতিবার ফেরার সময় একটি করে নতুন ফোন শুল্ক পরিশোধ করে আনার সুযোগ ছিল।

সোনা পাচার রোধে কড়াকড়ির কারণ

ঢাকা (Dhaka) ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর (Chattogram Airport) দিয়ে গত পাঁচ বছরে আনুমানিক ১৪২ টন সোনা আনা হয়েছে, যার বড় একটি অংশ পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া সীমান্তে সোনা জব্দ হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

ঘোষণার সময়সীমা বাড়ানো

ভুলবশত ঘোষণা না করা হলে আগের নিয়মে ৭ দিনের মধ্যে সংশোধন করা যেত। এখন সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ দিন করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা নিয়মমাফিক শুল্ক-কর দিয়ে পণ্য ছাড় করতে পারেন।

অতিরিক্ত পণ্যের ক্ষেত্রে সতর্কতা

নির্ধারিত সীমার বাইরে পণ্য আনলে শুল্ক, অর্থদণ্ড বা জরিমানা গুনতে হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের (Import-Export Controller) ছাড়পত্র লাগতে পারে। তবে নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত পণ্যের বেলায় কোনো ব্যতিক্রম নেই।

সরকারের উদ্দেশ্য

নতুন ব্যাগেজ বিধিমালার মাধ্যমে সরকার একদিকে সোনা পাচার রোধ ও শুল্ক আদায়ের প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে চায়, অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো নিশ্চিত করতে চায়, যেখানে নিয়মভঙ্গ না করে পণ্য আনা সম্ভব হয়।