নতুন নোট গ্রহণ না করায় এটিএম বুথে জনতার ক্ষোভ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন

ঈদ উপলক্ষে ডিজিটাল ও আধুনিক নকশায় ছাপানো ২০, ৫০ ও ১,০০০ টাকার নতুন নোট সম্প্রতি বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank)। নতুন নোটগুলোর নকশায় রয়েছে কান্তজির মন্দির (Kantaji Temple) সহ দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপাদান। তবে ৯২% মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের কিছু মানুষ এই প্রতীকী উপস্থাপন নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।

এটিএম বুথে অচল নতুন নোট

সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে এটিএম ব্যবহারকারীদের মধ্যে। বহু এটিএম বুথ (ATM Booth) এই নতুন নোট গ্রহণ করছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ নতুন ১,০০০ টাকার নোট দিয়ে কেনাকাটা করতে পারছেন না। কেউ কেউ দোকানদারদের কাছে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন, কারণ তারা মনে করছেন এটি জাল টাকা। এমনকি এটিএম মেশিনেও নোট ঢোকালে সেটি বাতিল করে দিচ্ছে।

প্রযুক্তিগত ত্রুটি, নাকি অব্যবস্থাপনা?

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এটিএম বুথে নতুন নোট গ্রহণ না করার পেছনে থাকতে পারে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, যেমন নোটের সাইজ বা কোড শনাক্তে ত্রুটি। কেউ কেউ বলছেন, এটি বাংলাদেশ ব্যাংক–এর পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্ত ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার ফলাফল। নতুন নোট রিলিজ দেওয়ার আগে এটিএম মেশিনগুলোতে সফটওয়্যার আপডেট বা হার্ডওয়্যার রিভিশন প্রয়োজন ছিল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ও কটাক্ষ

জনগণের ক্ষোভ এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “নতুন নোট দিলে সেটি যদি কেউ গ্রহণ না করে, তবে কিসের উন্নয়ন?” কেউ কেউ একে “ব্যাংকিং সিস্টেমের চরম ব্যর্থতা” বলেও মন্তব্য করেছেন।

আস্থার সংকটে ব্যাংকিং ব্যবস্থা

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি শুধু হাস্যকর নয়, বরং জনগণের ব্যাংকিং সেবার প্রতি আস্থাকে ধ্বংস করছে। সরকারের উচিত ছিল নতুন নোট ছাড়ার আগে এটিএম মেশিন, ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করা। শুধু আকর্ষণীয় নকশা নয়, নতুন মুদ্রা প্রযুক্তিগতভাবে ব্যবহারযোগ্য এবং জনগণের সুবিধার্থে প্রস্তুত হওয়া জরুরি ছিল।

ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা

এই সংকট যদি দ্রুত সমাধান না হয়, তা হলে এটি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংককে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।