মধুচন্দ্রিমায় স্বামীর রহস্যময় মৃত্যু, অভিযুক্ত স্ত্রীর দাবি ‘অজ্ঞান করে গাজীপুরে আনা হয়েছিল’

ভারতের নবদম্পতি রাজা রঘুবংশী ও সোনম রঘুবংশীর মেঘালয় (Meghalaya) ভ্রমণ ছিল তাদের মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশ্যে। কিন্তু আনন্দঘন সেই সফর শেষ হয় এক নির্মম হত্যাকাণ্ডে। গত ২৩ মে নিখোঁজ হওয়ার পর ২ জুন রাজা রঘুবংশীর মরদেহ একটি গিরিখাদে পাওয়া গেলে ঘটনাটি নিখোঁজ থেকে রূপ নেয় হত্যাকাণ্ডে।

আত্মসমর্পণ করলেন স্ত্রী, দাবি করলেন ‘ভিকটিম’

প্রায় এক সপ্তাহ পর উত্তর প্রদেশের গাজীপুরে (Ghazipur, Uttar Pradesh) আত্মসমর্পণ করেন রাজা রঘুবংশীর স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, তাকে অজ্ঞান করে গাজীপুরে ফেলে রাখা হয় এবং তিনি ভিকটিম হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন।

উত্তর প্রদেশ পুলিশ (Uttar Pradesh Police)–এর অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক অমিতাভ যশ বলেন, “সোনম পরিবারকে জানায়, সে গাজীপুর-বারানসী সড়কের ধারে এক ধাবায় অবস্থান করছে। এরপর স্থানীয় ও মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) পুলিশ যৌথ অভিযানে তাকে আটক করে।”

প্রেমিকের সঙ্গে মিলে হত্যার পরিকল্পনা?

মেঘালয় পুলিশ (Meghalaya Police) সন্দেহ করছে, সোনম তার সহকর্মী ও প্রেমিক রাজ কুশওয়াহার সঙ্গে মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তারা দুজনেই এখন গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, সোনম একজন “দুর্বল পরিকল্পনাকারী” এবং নিজেকে ভিকটিম সাজিয়ে পালাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।

তদন্তে সিসিটিভি ও আলামতের গুরুত্ব

মেঘালয় পুলিশের পুলিশ সুপার বিবেক সায়লেম জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মরদেহ দুর্গম এলাকায় ফেলে হত্যাকে নিখোঁজ হিসেবে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।

পরিবার যা বলছে

রাজা রঘুবংশীর ভাই বিপুল রঘুবংশী জানান, “সোনমের অফিসে রাজ কুশওয়াহা কাজ করতেন। তারা প্রায়ই ফোনে কথা বলত। যদিও আমি রাজকে দেখিনি, কিন্তু নাম শুনেছি। যদি রাজ জড়িত থাকে, তাহলে সোনমও থাকতে পারে।”

বিয়ের ১০ দিনের মাথায় মর্মান্তিক পরিণতি

১১ মে বিয়ে হওয়ার পর ২০ মে দম্পতি মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশে বের হন এবং ২১ মে পৌঁছান শিলং (Shillong)। এখান থেকেই শুরু হয় এই নির্মম ঘটনার সূত্রপাত।

চলমান তদন্ত

বর্তমানে মেঘালয় পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে এবং প্রয়োজন হলে উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) পুলিশ সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে। সোনমকে রাখা হয়েছে একটি ওয়ান-স্টপ সেন্টারে এবং পাঠানো হয়েছে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য।