হাসিনা আমাকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি প্রত্যাখ্যান করেছি: কর্নেল অলি

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (Liberal Democratic Party)’র প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (Oli Ahmad) দাবি করেছেন, তাঁকে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯৯৫ সালের প্রস্তাব ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

অলি আহমদ বলেন, ১৯৯৫ সালে তিনি যখন যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন, তখন আওয়ামী লীগ (Awami League) ও জামায়াত মিলে বিএনপি (BNP) সরকারের বিরুদ্ধে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিল। তখন শেখ হাসিনা তাঁর চাচা হাফিজ এবং নেতা মরহুম আ. খ. ম. জাহাঙ্গীরকে অলির বাসায় পাঠান। তাদের মাধ্যমে জানানো হয়, পার্লামেন্টে একটি ‘ক্যু’ হবে যেখানে ১৮৩ জন এমপি মিলিত হয়ে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে অলি আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে।

অলি বলেন, “প্রথম দুদিন আমি চিন্তা করলাম রাজি হতে পারি। কিন্তু তৃতীয় দিন গভীরভাবে ভাবলাম, আমাকে বেগম খালেদা জিয়া যোগাযোগমন্ত্রী বানিয়েছেন, তার সঙ্গে বেঈমানি করা উচিত নয়।” তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, “আমি নিজেই শেখ হাসিনাকে বলি—আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, কিন্তু আমি এই প্রস্তাবে রাজি নই।”

পরে আরও দুইবার প্রস্তাব

তিনি আরও জানান, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে মন্ত্রীত্ব, সংসদ আসন ও অর্থের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। তাঁর ভাষায়, “আমি অনেকবার অফার পেয়েছি, কিন্তু কখনও রাজি হইনি। অনেকেই প্রথমবারেই রাজি হয়ে যান।”

বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ও রাজনৈতিক ইতিহাস

অলি আহমদ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে দীর্ঘ সময় জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠনের পর তিনি দলের সঙ্গে দূরত্বে চলে যান এবং পরে বেরিয়ে এসে বি. চৌধুরী (B. Chowdhury)র সঙ্গে দল গঠন করেন। সেখান থেকেও আলাদা হয়ে এলডিপি গঠন করেন। যদিও গত এক যুগ ধরে তিনি বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী হিসেবে রাজপথে সক্রিয় রয়েছেন।

এই বক্তব্যগুলো তিনি জনপ্রিয় টক শো ‘ঠিকানা’তে উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে কথোপকথনে দেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।