অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা (Dr. Muhammad Yunus) ঘোষণা দিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত নির্বাচিত সরকারে তার থাকার কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেই। তিনি এই মন্তব্য করেন বুধবার (১১ জুন) লন্ডনে আয়োজিত একটি নীতি সংলাপে অংশ নিয়ে।
চ্যাথাম হাউস সংলাপে স্পষ্ট বার্তা
যুক্তরাজ্য (United Kingdom) সফররত ড. ইউনূস লন্ডনের চ্যাথাম হাউস (Chatham House) আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “নো ওয়ে, নো ওয়ে (একদমই না)।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের কেউই নির্বাচিত সরকারে অংশ নেবেন না। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।”
ইতিহাসের সেরা নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যয়
ড. ইউনূস বলেন, “১৭ বছর পর আমরা একটি প্রকৃত নির্বাচন করতে যাচ্ছি, যা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হবে। আমরা চাই এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্ভুল হোক, কারণ যদি নির্বাচন ভুল হয়, তাহলে তার আর কোনো সমাধান থাকবে না।”
তরুণদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা কেবল একটি সরকার নির্বাচনের জন্য রক্ত দেয়নি, তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে লড়ছে।”
সংস্কার ও ঐকমত্যের প্রচেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের দিকে তাকিয়ে আছি এবং আমাদের দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করা।”
জুলাই সনদ ও ভবিষ্যতের রূপরেখা
ড. ইউনূস জানান, “আমরা ‘জুলাই সনদ’ আসার জন্য অপেক্ষা করছি, যা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা হিসেবে।”
বৈঠক ও সংলাপ: সফরের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম
লন্ডনে সফরের দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (Jonathan Powell) এর সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। এতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।
পরে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন চ্যাথাম হাউসের এশিয়া-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের পরিচালক বেন ব্ল্যান্ড ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. চিয়েটিজ বাজপাই। এরপর বেলা ১১টায় চ্যাথাম হাউসে মূল বক্তা হিসেবে তিনি সংলাপে অংশ নেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিক, গবেষক ও সাংবাদিকরা।