বিদেশে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করার ঘটনাকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (National Citizen Party) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী (Nasir Uddin Patwari)। শুক্রবার (১৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে জনগণের মাধ্যমে, বিদেশি মিটিং নয়’
লন্ডনে (London) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) ও বিএনপির (BNP) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের (Tarique Rahman) বৈঠকের সমালোচনা করে নাসির উদ্দিন বলেন, “লন্ডনে বসে সরকারের সঙ্গে একটি দলের মিটিং দেশবাসীর স্বার্থ ও গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা। শহীদদের রক্তকে অবমাননা করে বিদেশের মাটিতে মিটিং কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে দেশের জনগণের মাধ্যমে, বিদেশি আলোচনায় নয়।”
‘দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থানের দিকে যেতে হতে পারে’
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “বর্তমান সরকার যদি সংস্কার, বিচার এবং সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়, তাহলে এনসিপি দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থানের দিকে যেতে বাধ্য হবে।”
তিনি স্পষ্ট জানান, “এই সরকার যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনে ব্যর্থ হয়, তাহলে এনসিপি কোনো নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবে না।”
কাঠামোগত পরিবর্তনের দাবি
তিনি বলেন, “শুধু রাজা বা রানী বদল হলেই চলে না, কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।”
বিএনপির অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন
বিএনপির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “তারা একসময় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানালেও এখন রোজার আগের সময়সীমায় এসেছে। কিন্তু এখনো জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র, বিচার বা নতুন সংবিধান নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রস্তাব দেয়নি।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান
তিনি বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ ও আহতদের কষ্টের মূল্যায়ন করতে হবে। গ্রামে গিয়ে জানতে হবে জনগণ কী চায়। জনগণের বেদনা যদি সরকার বুঝতে পারে, তাহলে তারা বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হবে।”
সুষ্ঠু নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের দাবি
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “শুধু নির্বাচন করলেই হবে না। সঠিক বিচার ও সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের অর্থ নেই। এখনকার নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থার প্রতীক নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শক্তির পক্ষে কাজ করছে।”
তিনি যোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, আরপিও সংশোধন এবং জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে নির্বাচন না হলে দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব নয়।”