নারীদের সরাসরি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান ‘প্রতিশ্রুতি বিরোধী’: তাসনিম জারা

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এর যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, বিএনপি এখন নিজের অতীত প্রতিশ্রুতির বিরোধিতা করছে। শুক্রবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিএনপি-র নারীনীতি এবং ২০০১ সালের নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে বিস্তারিত মতামত তুলে ধরেন।

বিএনপি অতীতের প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করছে

তাসনিম জারা লিখেছেন, ঈদের আগে ঐকমত্য কমিশনে তিনি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিলে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমেদ তা প্রত্যাখ্যান করেন। সালাহউদ্দিন বলেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় এটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়, বরং বর্তমান পদ্ধতিতেই নারী এমপিদের মনোনয়ন বহাল থাকা উচিত।

২০০১ সালের ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দেন জারা

ডা. তাসনিম জারা বলেন, ২০০১ সালে বেগম খালেদা জিয়া নিজেই সংরক্ষিত আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী, যাদের পশ্চাদপদ রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়।” সেই ইশতেহারের ৩.১৩ ধারায় বলা হয়েছিল, “নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য সংসদে তাদের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচন আয়োজন করা হবে।”

তাসনিম জারা প্রশ্ন তোলেন, আজ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ইতিহাসকে অস্বীকার করছে বিএনপি কেন?

দলীয় নিয়ন্ত্রণে মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সমালোচনা

জারা লিখেছেন, বিএনপি যেই কাঠামো বহাল রাখতে চায়, সেখানে নারীদের কোনো নির্দিষ্ট এলাকা, ভোটার কিংবা জনদায়িত্ব থাকে না। বরং তাদের দায়িত্ব থাকে কেবল দলের কাছে। এতে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি বলেন, “আজ ২০২৫ সালে, ঐতিহাসিক সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে বিএনপির প্রতিনিধি বলছেন—সময় এখনো হয়নি। হয়তো ১০ বছর পর হবে। কিন্তু কী দেখে বুঝব সময় হয়েছে? তা তো বলেননি।”

নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় নতুন উদ্যোগ

ডা. তাসনিম জারা ঘোষণা দেন, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের দাবিতে তারা একটি ইভেন্ট চালু করেছেন, যেখানে জনগণের স্বাক্ষর সংগ্রহ এবং খোলা চিঠির মতো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি তরুণদের বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

পোস্টের শেষাংশে তিনি বলেন, **“আমরা পিছিয়ে যেতে পারি না। আওয়াজ তুলতেই হবে।”